‘আম্মা আমাকে পুলিশ ধরেছে, এক লাখ টাকা চায়। না দিলে নাকি ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবে।’ কাঁদতে কাঁদতেই মোবাইল ফোনে মা আছিয়া বেগমকে কথাগুলো বলছিলেন ২৫ বছর বয়সী যুবক আশিক মোহাম্মদ। এরপর ছেলের মোবাইল ফোন বন্ধ পান মা। পরে শোনেন ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী। পল্টন থানায় আটক আছে। গত ২৭ জুন মধ্যরাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে পুলিশ আরও দুই যুবকের সঙ্গে আশিককে আটক করে। এরপর থেকে আশিক কারাগারে।
আশিকের বাবা ফরহাদ হোসেন দৈনিক ইত্তেফাক ও পরে নিউ নেশন পত্রিকার ফটোসাংবাদিক ছিলেন। একমাত্র ছেলেও বছর দুই ধরে অবজারভার পত্রিকায় ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত। স্বজনের অভিযোগ, পুলিশের দাবি অনুযায়ী এক লাখ টাকা দিতে না পারায় পুলিশ তাকে ১০ পিস ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে।আশিকের বাবা ফরহাদ হোসেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বাসায় শয্যাশায়ী। এত বড় ঘটনার পর লোকলজ্জায় মা আছিয়া বেগমও শুরুর দিকে মুখ খোলেননি।গতকাল শুক্রবার আছিয়া বেগম সমকালকে বলেন, ঈদের পরের দিন তার ছেলে বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিল। বাসায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শান্তিনগর মোড়ে পুলিশ তাকে আটক করে। ছেলে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর গাড়িতে তুলে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে ছেলে তাকে ফোন দিয়ে ঘটনা জানায় আর পুলিশকে এক লাখ টাকা দিতে বলে। তা নাহলে তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবে বলে জানিয়েছিল।আছিয়া বলেন, পুলিশের দাবি অনুযায়ী ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী_ এটা শুনে তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তিনি কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। ছেলের অফিসও বন্ধ। ঈদের ছুটি থাকায় কাউকে জানানো যাচ্ছিল না। অসুস্থ স্বামীকে বাসায় একা রেখে এত রাতে তিনি থানায় যেতে পারছিলেন না। পরের দিন সকালে আশিকের এক বন্ধুকে থানায় পাঠান। তিনি জানেন তার ছেলে এসবের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে না। তার কাছে পুলিশের চাওয়া অনুযায়ী টাকাও ছিল না।

আশিককে আটক করেছিলেন পল্টন থানার সহকারী উপপরির্দশক আশরাফ আলী। গতকাল তিনি সমকালকে বলেন, তারা টহল ডিউটিতে ছিলেন। ভোররাত ৪টার দিকে শান্তিনগর বাজারের সামনে আশিক ও আল আমিনসহ তিন যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। তাদের দেহ তল্লাশি করে আশিকের পকেটে ১০ পিস, আল আমিনের পকেটে ১০ পিস এবং অপর যুবকের পকেটে ৫ পিস ইয়াবা পান। এরপর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে মামলা করেন।

দাবি করা টাকা না পেয়ে আশিকের পকেটে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে_ পরিবারের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই আশরাফ আলী বলেন, আশিক তার পেশাগত পরিচয় দেননি। তাছাড়া তিনি আশিককে মারধরও করেননি। টাকাও চাননি। ইয়াবা পেয়ে আইন অনুযায়ী মামলা দিয়েছেন।

আটকের খবর পেয়ে পরদিন সকালে পল্টন থানায় গিয়েছিলেন আশিকের বন্ধু আল আমিন। তিনি সমকালকে বলেন, আশিককে ফেরত পেতে কি করতে হবে সে বিষয়ে আমি এএসআই আশরাফের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, তিন ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল। এখন মামলা হয়ে গেছে। আর কিছু করার নেই।

আশিকের কর্মস্থল অবজারভারের প্রধান ফটোসাংবাদিক জীবন আমীর সমকালকে বলেন, তিনি খবর পেয়ে থানায় গিয়েছিলেন। ততক্ষণে আশিককে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের বিষয়েও পুলিশের কাছ থেকে একেক সময়ে একেক বক্তব্য মিলেছে। জীবন আমীর বলেন, তিনি কারাগারে আশিকের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন। পুলিশ যে দুই যুবকের সঙ্গে আশিককে আটকের কথা বলছে, আশিক তাদের চেনেন না। সে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত আশিকের সহকর্মীরা বলছেন, আশিক অত্যন্ত শান্ত ও ভদ্র প্রকৃতির। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর সে অর্থকষ্টে পড়ালেখাও শেষ করতে পারেনি। সংসারের হাল ধরার জন্য তার বাবার পরিচিতজনরা তাকে অবজারভারে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন।

পল্টন থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, তিনি থানায় যোগদানের আগেই মামলা হয়েছে। এজাহার অনুযায়ী তদন্ত চলছে। তবে আসামির পরিবার পুলিশের ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ জানালে তারা বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করবেন।

সমকাল প্রতিবেদক ‘আম্মা আমাকে পুলিশ ধরেছে, এক লাখ টাকা চায়। না দিলে নাকি ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবে।’ কাঁদতে কাঁদতেই মোবাইল ফোনে মা আছিয়া বেগমকে কথাগুলো বলছিলেন ২৫ বছর বয়সী যুবক আশিক মোহাম্মদ। এরপর ছেলের মোবাইল ফোন বন্ধ পান মা। পরে শোনেন ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী। পল্টন থানায় আটক আছে। গত ২৭ জুন মধ্যরাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে পুলিশ আরও দুই যুবকের সঙ্গে আশিককে আটক করে। এরপর থেকে আশিক কারাগারে। আশিকের বাবা ফরহাদ হোসেন দৈনিক ইত্তেফাক ও পরে নিউ নেশন পত্রিকার ফটোসাংবাদিক ছিলেন। একমাত্র ছেলেও বছর দুই ধরে অবজারভার পত্রিকায় ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত। স্বজনের অভিযোগ, পুলিশের দাবি অনুযায়ী এক লাখ টাকা দিতে না পারায় পুলিশ তাকে ১০ পিস ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। আশিকের বাবা ফরহাদ হোসেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বাসায় শয্যাশায়ী। এত বড় ঘটনার পর লোকলজ্জায় মা আছিয়া বেগমও শুরুর দিকে মুখ খোলেননি। গতকাল শুক্রবার আছিয়া বেগম সমকালকে বলেন, ঈদের পরের দিন তার ছেলে বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিল। বাসায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শান্তিনগর মোড়ে পুলিশ তাকে আটক করে। ছেলে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর গাড়িতে তুলে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে ছেলে তাকে ফোন দিয়ে ঘটনা জানায় আর পুলিশকে এক লাখ টাকা দিতে বলে। তা নাহলে তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবে বলে জানিয়েছিল। আছিয়া বলেন, পুলিশের দাবি অনুযায়ী ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী_ এটা শুনে তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তিনি কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। ছেলের অফিসও বন্ধ। ঈদের ছুটি থাকায় কাউকে জানানো যাচ্ছিল না। অসুস্থ স্বামীকে বাসায় একা রেখে এত রাতে তিনি থানায় যেতে পারছিলেন না। পরের দিন সকালে আশিকের এক বন্ধুকে থানায় পাঠান। তিনি জানেন তার ছেলে এসবের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে না। তার কাছে পুলিশের চাওয়া অনুযায়ী টাকাও ছিল না। আশিককে আটক করেছিলেন পল্টন থানার সহকারী উপপরির্দশক আশরাফ আলী। গতকাল তিনি সমকালকে বলেন, তারা টহল ডিউটিতে ছিলেন। ভোররাত ৪টার দিকে শান্তিনগর বাজারের সামনে আশিক ও আল আমিনসহ তিন যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। তাদের দেহ তল্লাশি করে আশিকের পকেটে ১০ পিস, আল আমিনের পকেটে ১০ পিস এবং অপর যুবকের পকেটে ৫ পিস ইয়াবা পান। এরপর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে মামলা করেন। দাবি করা টাকা না পেয়ে আশিকের পকেটে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে_ পরিবারের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই আশরাফ আলী বলেন, আশিক তার পেশাগত পরিচয় দেননি। তাছাড়া তিনি আশিককে মারধরও করেননি। টাকাও চাননি। ইয়াবা পেয়ে আইন অনুযায়ী মামলা দিয়েছেন। আটকের খবর পেয়ে পরদিন সকালে পল্টন থানায় গিয়েছিলেন আশিকের বন্ধু আল আমিন। তিনি সমকালকে বলেন, আশিককে ফেরত পেতে কি করতে হবে সে বিষয়ে আমি এএসআই আশরাফের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, তিন ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল। এখন মামলা হয়ে গেছে। আর কিছু করার নেই। আশিকের কর্মস্থল অবজারভারের প্রধান ফটোসাংবাদিক জীবন আমীর সমকালকে বলেন, তিনি খবর পেয়ে থানায় গিয়েছিলেন। ততক্ষণে আশিককে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের বিষয়েও পুলিশের কাছ থেকে একেক সময়ে একেক বক্তব্য মিলেছে। জীবন আমীর বলেন, তিনি কারাগারে আশিকের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন। পুলিশ যে দুই যুবকের সঙ্গে আশিককে আটকের কথা বলছে, আশিক তাদের চেনেন না। সে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত আশিকের সহকর্মীরা বলছেন, আশিক অত্যন্ত শান্ত ও ভদ্র প্রকৃতির। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর সে অর্থকষ্টে পড়ালেখাও শেষ করতে পারেনি। সংসারের হাল ধরার জন্য তার বাবার পরিচিতজনরা তাকে অবজারভারে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। পল্টন থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, তিনি থানায় যোগদানের আগেই মামলা হয়েছে। এজাহার অনুযায়ী তদন্ত চলছে। তবে আসামির পরিবার পুলিশের ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ জানালে তারা বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করবেন।

সমকাল প্রতিবেদক [] ‘আম্মা আমাকে পুলিশ ধরেছে, এক লাখ টাকা চায়। না দিলে নাকি ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবে।’ কাঁদতে কাঁদতেই মোবাইল ফোনে মা আছিয়া বেগমকে কথাগুলো বলছিলেন ২৫ বছর বয়সী যুবক আশিক মোহাম্মদ। এরপর ছেলের মোবাইল ফোন বন্ধ পান মা। পরে শোনেন ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী। পল্টন থানায় আটক আছে। গত ২৭ জুন মধ্যরাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে পুলিশ আরও দুই যুবকের সঙ্গে আশিককে আটক করে। এরপর থেকে আশিক কারাগারে। আশিকের বাবা ফরহাদ হোসেন দৈনিক ইত্তেফাক ও পরে নিউ নেশন পত্রিকার ফটোসাংবাদিক ছিলেন। একমাত্র ছেলেও বছর দুই ধরে অবজারভার পত্রিকায় ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত। স্বজনের অভিযোগ, পুলিশের দাবি অনুযায়ী এক লাখ টাকা দিতে না পারায় পুলিশ তাকে ১০ পিস ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে।আশিকের বাবা ফরহাদ হোসেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বাসায় শয্যাশায়ী। এত বড় ঘটনার পর লোকলজ্জায় মা আছিয়া বেগমও শুরুর দিকে মুখ খোলেননি।গতকাল শুক্রবার আছিয়া বেগম সমকালকে বলেন, ঈদের পরের দিন তার ছেলে বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিল। বাসায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শান্তিনগর মোড়ে পুলিশ তাকে আটক করে। ছেলে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর গাড়িতে তুলে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে ছেলে তাকে ফোন দিয়ে ঘটনা জানায় আর পুলিশকে এক লাখ টাকা দিতে বলে। তা নাহলে তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবে বলে জানিয়েছিল। আছিয়া বলেন, পুলিশের দাবি অনুযায়ী ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী_ এটা শুনে তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তিনি কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। ছেলের অফিসও বন্ধ। ঈদের ছুটি থাকায় কাউকে জানানো যাচ্ছিল না। অসুস্থ স্বামীকে বাসায় একা রেখে এত রাতে তিনি থানায় যেতে পারছিলেন না। পরের দিন সকালে আশিকের এক বন্ধুকে থানায় পাঠান। তিনি জানেন তার ছেলে এসবের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে না। তার কাছে পুলিশের চাওয়া অনুযায়ী টাকাও ছিল না। আশিককে আটক করেছিলেন পল্টন থানার সহকারী উপপরির্দশক আশরাফ আলী। গতকাল তিনি সমকালকে বলেন, তারা টহল ডিউটিতে ছিলেন। ভোররাত ৪টার দিকে শান্তিনগর বাজারের সামনে আশিক ও আল আমিনসহ তিন যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। তাদের দেহ তল্লাশি করে আশিকের পকেটে ১০ পিস, আল আমিনের পকেটে ১০ পিস এবং অপর যুবকের পকেটে ৫ পিস ইয়াবা পান। এরপর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে মামলা করেন। দাবি করা টাকা না পেয়ে আশিকের পকেটে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে_ পরিবারের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই আশরাফ আলী বলেন, আশিক তার পেশাগত পরিচয় দেননি। তাছাড়া তিনি আশিককে মারধরও করেননি। টাকাও চাননি। ইয়াবা পেয়ে আইন অনুযায়ী মামলা দিয়েছেন। আটকের খবর পেয়ে পরদিন সকালে পল্টন থানায় গিয়েছিলেন আশিকের বন্ধু আল আমিন। তিনি সমকালকে বলেন, আশিককে ফেরত পেতে কি করতে হবে সে বিষয়ে আমি এএসআই আশরাফের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, তিন ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল। এখন মামলা হয়ে গেছে। আর কিছু করার নেই। আশিকের কর্মস্থল অবজারভারের প্রধান ফটোসাংবাদিক জীবন আমীর সমকালকে বলেন, তিনি খবর পেয়ে থানায় গিয়েছিলেন। ততক্ষণে আশিককে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের বিষয়েও পুলিশের কাছ থেকে একেক সময়ে একেক বক্তব্য মিলেছে। জীবন আমীর বলেন, তিনি কারাগারে আশিকের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন। পুলিশ যে দুই যুবকের সঙ্গে আশিককে আটকের কথা বলছে, আশিক তাদের চেনেন না। সে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত আশিকের সহকর্মীরা বলছেন, আশিক অত্যন্ত শান্ত ও ভদ্র প্রকৃতির। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর সে অর্থকষ্টে পড়ালেখাও শেষ করতে পারেনি। সংসারের হাল ধরার জন্য তার বাবার পরিচিতজনরা তাকে অবজারভারে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। পল্টন থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, তিনি থানায় যোগদানের আগেই মামলা হয়েছে। এজাহার অনুযায়ী তদন্ত চলছে। তবে আসামির পরিবার পুলিশের ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ জানালে তারা বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করবেন। সমকাল প্রতিবেদক ‘আম্মা আমাকে পুলিশ ধরেছে, এক লাখ টাকা চায়। না দিলে নাকি ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবে।’ কাঁদতে কাঁদতেই মোবাইল ফোনে মা আছিয়া বেগমকে কথাগুলো বলছিলেন ২৫ বছর বয়সী যুবক আশিক মোহাম্মদ। এরপর ছেলের মোবাইল ফোন বন্ধ পান মা। পরে শোনেন ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী। পল্টন থানায় আটক আছে। গত ২৭ জুন মধ্যরাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে পুলিশ আরও দুই যুবকের সঙ্গে আশিককে আটক করে। এরপর থেকে আশিক কারাগারে। আশিকের বাবা ফরহাদ হোসেন দৈনিক ইত্তেফাক ও পরে নিউ নেশন পত্রিকার ফটোসাংবাদিক ছিলেন। একমাত্র ছেলেও বছর দুই ধরে অবজারভার পত্রিকায় ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত। স্বজনের অভিযোগ, পুলিশের দাবি অনুযায়ী এক লাখ টাকা দিতে না পারায় পুলিশ তাকে ১০ পিস ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। আশিকের বাবা ফরহাদ হোসেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বাসায় শয্যাশায়ী। এত বড় ঘটনার পর লোকলজ্জায় মা আছিয়া বেগমও শুরুর দিকে মুখ খোলেননি। গতকাল শুক্রবার আছিয়া বেগম সমকালকে বলেন, ঈদের পরের দিন তার ছেলে বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিল। বাসায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শান্তিনগর মোড়ে পুলিশ তাকে আটক করে। ছেলে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর গাড়িতে তুলে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে ছেলে তাকে ফোন দিয়ে ঘটনা জানায় আর পুলিশকে এক লাখ টাকা দিতে বলে। তা নাহলে তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবে বলে জানিয়েছিল। আছিয়া বলেন, পুলিশের দাবি অনুযায়ী ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী_ এটা শুনে তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তিনি কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। ছেলের অফিসও বন্ধ। ঈদের ছুটি থাকায় কাউকে জানানো যাচ্ছিল না। অসুস্থ স্বামীকে বাসায় একা রেখে এত রাতে তিনি থানায় যেতে পারছিলেন না। পরের দিন সকালে আশিকের এক বন্ধুকে থানায় পাঠান। তিনি জানেন তার ছেলে এসবের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে না। তার কাছে পুলিশের চাওয়া অনুযায়ী টাকাও ছিল না। আশিককে আটক করেছিলেন পল্টন থানার সহকারী উপপরির্দশক আশরাফ আলী। গতকাল তিনি সমকালকে বলেন, তারা টহল ডিউটিতে ছিলেন। ভোররাত ৪টার দিকে শান্তিনগর বাজারের সামনে আশিক ও আল আমিনসহ তিন যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। তাদের দেহ তল্লাশি করে আশিকের পকেটে ১০ পিস, আল আমিনের পকেটে ১০ পিস এবং অপর যুবকের পকেটে ৫ পিস ইয়াবা পান। এরপর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে মামলা করেন। দাবি করা টাকা না পেয়ে আশিকের পকেটে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে_ পরিবারের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই আশরাফ আলী বলেন, আশিক তার পেশাগত পরিচয় দেননি। তাছাড়া তিনি আশিককে মারধরও করেননি। টাকাও চাননি। ইয়াবা পেয়ে আইন অনুযায়ী মামলা দিয়েছেন। আটকের খবর পেয়ে পরদিন সকালে পল্টন থানায় গিয়েছিলেন আশিকের বন্ধু আল আমিন। তিনি সমকালকে বলেন, আশিককে ফেরত পেতে কি করতে হবে সে বিষয়ে আমি এএসআই আশরাফের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, তিন ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল। এখন মামলা হয়ে গেছে। আর কিছু করার নেই। আশিকের কর্মস্থল অবজারভারের প্রধান ফটোসাংবাদিক জীবন আমীর সমকালকে বলেন, তিনি খবর পেয়ে থানায় গিয়েছিলেন। ততক্ষণে আশিককে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের বিষয়েও পুলিশের কাছ থেকে একেক সময়ে একেক বক্তব্য মিলেছে। জীবন আমীর বলেন, তিনি কারাগারে আশিকের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন। পুলিশ যে দুই যুবকের সঙ্গে আশিককে আটকের কথা বলছে, আশিক তাদের চেনেন না। সে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত আশিকের সহকর্মীরা বলছেন, আশিক অত্যন্ত শান্ত ও ভদ্র প্রকৃতির। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর সে অর্থকষ্টে পড়ালেখাও শেষ করতে পারেনি। সংসারের হাল ধরার জন্য তার বাবার পরিচিতজনরা তাকে অবজারভারে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। পল্টন থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, তিনি থানায় যোগদানের আগেই মামলা হয়েছে। এজাহার অনুযায়ী তদন্ত চলছে। তবে আসামির পরিবার পুলিশের ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ জানালে তারা বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করবেন। সমকাল প্রতিবেদক

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031