প্রায় ৮৫% ভাগ লোকই বেকার কক্সবাজার জেলায় উল্লেখ্যযোগ্য কোন শিল্প কারখানা না থাকায়। তাই ইয়াবা আগ্রাসন ও অবৈধ অপকর্মের জিনঞ্জির থেকে বেড়িয়ে আসতে পারছে না এতদ্বাঞ্চলের মানুষগুলো। চারটি সংসদীয় আসন টেকনাফ উখিয়া, কক্সবাজার-রামু, চকরিয়া-পেকুয়া ও মহেশখালীয়-কুতুবদিয়া ও ৮টি উপজেলা ঘিরে কক্সবাজার জেলার অবস্থান। তৎমধ্যে পার্বত্য বান্দরবন জেলার অধিকাংশ এলাকাসহ কক্সবাজার জেলার সবকটি উপজেলায় পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মিয়ানমার সীমান্তবর্তী। তাছাড়া সূত্র তথ্য মতে ০৪টি সংসদীয় আসনের ০৮টি উপজেলায় প্রায় ০১ কোটির অধিক লোকের বসবাস। তারমধ্যে আবার প্রায় ০৫ লাখেরও বেশি অনুপ্রবেশকৃত রোহিঙ্গারা জেলার বিভিন্ন স্থানে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ক্যাম্প ও বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে বাস করছে। তারমধ্যে সব উপজেলার গড় আনুপাতিক হারে শিক্ষিতের সংখ্যা এখনও ৫০% ভাগ ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। তথ্যানুসন্ধানে আরো জানা যায়- জেলার কোথাও উল্লেখ্য যোগ্য কোন শিল্প-কলকারখানা ও ইন্ডাষ্ট্রি গডে না উঠায় প্রায় ৮৫% লোকই আজ বেকারত্বের অভিশাপে জর্জরিত। বাকী ১৫ ভাগ লোকের মধ্যে শিক্ষিতের কিছু অংশ চাকুরীজীবি, কিছু অংশ দিনমজুর, কিছু অংশ সাগর ও নদীতে মাছ আহরণ করে এবং কিছু অংশ পাহাড়ে লাকী আহরণ করে সংসারে জীবিকা নির্বাহ করা ছাড়া উল্লেখ্য যোগ্য কোন কর্মসংস্থান নেই। অনাহারে অর্ধাহারে সংসারের অভাব অনটনের ক্লানি মাথায় নিয়ে প্রতিনিয়ত জীবিন চলছে জেলার মানুষ গুলোর। সুতরাং বাংলাদেশের কোন জায়গায় ইয়াবা নামক সেই মরণঘাতি মাদকের উৎপাদন ক্ষেত্র নেই। বান্দরবন জেলার অধিকাংশ এলাকাও কক্সবাজার জেলার ০৪টি সংসদীয় আসনের সবকটি উপজেলায় মিয়ানমার সীমান্তবর্তী হওয়ায় সেদেশের উৎপাদিত মরণঘাতী মাদক, বাবা ও ইয়াবা ট্যাবলেড কালো বাজারের মাধ্যমে সূলভ মূল্যে সেদেশের প্রশাসনের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের নির্ধারিত গডফাদার ও কারখানার মালিকদের হাত ধরে পূর্ব থেকেই ব্যবসায়িক সূত্রে পরিচিত বাংলাদেশের গুটি কয়েক কালোবাজারি গডফাদারদের মাধ্যমে প্রথম এদেশে আসে। বিশেষ করে টেকনাফ সীমান্তেই এসব গডফাদার ও কালোবাজারীদের অবস্থান ও আনা গোনা বেশি ছিল বিধায় টেকনাফটি আজ ইতিহাসের পাতায় কালো তালিকার সাক্ষী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। অল্প পুঁজি দিয়ে বেশি মুনাফা লাভের আশায় অন্যান্য ব্যবসা কে ঢাল হিসেবে রেখে ব্যবসায়ীরা সেদিকে বেশি ঝুকে পড়েছে। বর্তমানে শুধু ব্যবসায়ীরা নয়; পুরো সীমান্ত এলাকার মানুষ গুলো অধিকাংশই এখন ইয়াবা ছাড়া কিছুই দেখছে না। তাই আজ এ মরণঘাতি বাবা ও ইয়াবার কারণে দেশ-বিদেশে একটি ঘৃণিত নাম কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলাটি। এমনকি বলা হচ্ছে, টেকনাফ সীমান্ত দিয়েই এসব মরণঘাটি ইয়াবা নাকি মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ করে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু কেন এ অপবাধ। এটা কি কোনদিন উপলব্ধি করেছিল কেউ। যুগ যুগ ধরে পালাবদলক্রমে বার বার ক্ষমতাই আসামীন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচিত জেলার ৪টি সংসদীয় আসনের অভিভাবক নামধারী সেই সব ব্যক্তিরাও কি চেষ্টা করেছিল? এতদ্বাঞ্চলের কেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্যেন্নয়নের কথা। বর্তমান ডিজিটাল যুগেও পূর্বের সেই সব পুরনো চিত্র কক্সবাজার জেলার মানুষ গুলোকে বার বার নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। তাতে সাধারণ মানুষেরই বা কি দোষ? এতদ্বাঞ্চলের বেকার মানুষ গুলো করবে টা কি? নেই কোন শিল্প কলকারখানা, নেই কোন ইন্ড্রাষ্ট্রি ও নেই কোন উল্লেখ্যযোগ্য কর্মসংস্থান। কাগজে কলমে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থাকলেও কর্মসংস্থান না থাকায় নেই বেকারদের প্রশিক্ষণের উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা। তাই বেকারত্বের অভিশাপ ও ইয়াবা আগ্রাসনের জিনঞ্জির থেকে জেলার মানুষ গুলোকে মুক্ত করতে হলে হয়তো জেলার বিভিন্ন উপজেলায় উল্লেখ্যযোগ্য শিল্পপ্রতিষ্ঠা ও কলকারখানা প্রতিষ্ঠা করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকার সমস্যা সমাধান করতে হবে; নয়তো দু’দেশের সীমান্ত পর্যায়ে কুটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোনভাবেই যাতে মরণঘাতি ইয়াবা বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে; সে ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। এসব ক্ষেত্রে সরকারের প্রশাসনযন্ত্র যদি একটি স্বচ্ছতা ও জবাবদীহিতামূলকভাবে কাজ করে তাহলে এটা বন্ধ করা অনেকাংশে সফলতার আলো দেখবে বলে জেলার সচেতন মানুষ গুলো মনে করেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031