এই আশার আলো অচিরেই নিভে যাবে।’ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে আপিল বিভাগের রায়ের কারণে বিএনপি মহাখুশি মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘তাদের অন্য ইস্যু মরে গেছে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের জন্মদিনের আলোচনায় ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ সুপ্রিমে কোর্টের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় মহাখুশি। এরা এভাবেই খুশি হয়। আনন্দের জগায় মাথায় নিয়ে নৃত্য করছে।’
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদে ফিরিয়ে নিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। পরে এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে আদালতে রিট আবেদন করেন মনজিল মোরসেদ। আর এই রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ৫ মে এই সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করেছিল। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে আপিল বিভাগ গত ৩ জুলাই এই সংধোশনীকে অবৈধ ঘোষণা করে।
উচ্চ আদালতের এই রায় সরকারের জন্য বিরাট ধাক্কা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রায় নিয়ে প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে নিষেধ করেছেন। তবে সংসদে সরকারি দলের সদস্যরা তীব্র সমালোচনা করেছেন আপিল বিভাগের।
যদিও শুক্রবার সিলেটে এক আলোচনায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘আদালতে বাতিল হওয়া ষোড়শ সংশোধনী সংসদে আবার পাস করা হবে। প্রয়োজনে অনবরত পাস করা হবে।… বিচারকরা জনগণের প্রতিনিধিদের ওপর খবরদারি করেন। অথচ আমরা তাদের নিয়োগ দেই। বিচারকদের এমন আচরণ ঠিক নয়।’
ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পর আর সরকারের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই বলে মনে করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানান।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবেও বিএনপির এক নেতা একই ধরনের বক্তব্য রাখেন। এটার উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে একজন বলে গেছেন, তারা(বিএনপি) আশার আলো দেখছেন। অন্য ইস্যু মরে গেছে এই আশার আলো অচিরেই নিভে যাবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আসুন। ঘটনা, দুর্ঘটনায় ইস্যু খুঁজে লাভ নাই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতে নরেন্দ্র মোদী যখন ক্ষমতায় এলো তখন সকাল বেলা ফলাফলের আগেই ভারতীয় দূতাবাসে ফুল দিয়েছিল। আমেরিকা রেজাল্ট বের হওয়ার আগে বাংলাদেশে সকল ফুলের দোকানে ফুল বিক্রি হয়ে যায়, মিষ্টির দোকানে মিষ্টি বিক্রি হয়ে যায়, হিলারি ক্লিনটন আসবেন বলে, ক্ষমতায় বসবেন বলে। তারা মনে করেছিল হিলারি ক্ষমতায় এসে তাদের ক্ষমতায় বসাবে।কিন্তু ক্ষমতার মালিক জনগণ। জনগণ ছাড়া কাউকে কেউ ক্ষমতায় বসাতে পারে না।’
বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামালের প্রশংসা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একেকজন ক্ষমতায় গেলে হয়ে ওঠেন বিকল্প পাওয়ার সেন্টার। কিন্তু শেখ কামাল তেমন মানুষ ছিলেন না। তাঁর কোন হাওয়ার ভবন ছিল না। শেখ কামালের মধ্যে যেসব গুণাবলী ছিল তা তার সমাসায়িককালের কারও মধ্যে আমি দেখিনি।’
‘শেখ কামাল পরবর্তী নির্বাচনের জন্য কাজ করেননি। তিনি কাজ করেছিলেন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য।’
তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘তুচ্ছ কারণে ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। এই প্রবণতা আত্মঘাতী। এসব আত্মঘাতী কাজ আমাদের বন্ধ করতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান প্রমূখ এ সময় বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অভিনেতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
