ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ উচ্চ আদালত থেকে রায়ের পর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক বিনা নোটিশে গুলশানের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ কার্যক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছেন ।

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এই আবেদন করা হয়। মওদুদ আহমদের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আল মাহমুদ বলেন, বাড়ি থেকে উচ্ছেদ নিয়ে নিম্ন আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা রয়েছে। বিচারিক আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকায় হাইকোর্ট থেকে মামলা প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছি। আগামীকাল মঙ্গলবার এই আবেদনের উপর শুনানি হবে বলে জানান তিনি।

গুলশানের বাড়ি নিয়ে মওদুদ আহমেদের করা রিভিউ খারিজ হয়ে যাওয়ার পর গত ৭ জুন গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ১৫৯ নম্বর প্লটের বাড়ির মালামাল উচ্ছেদ করে বাড়িটি নিয়ন্ত্রণ নেয় রাজউক। তবে উচ্ছেদ বিষয়ে তাকে কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি দাবি করে উচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ৮ জুন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন মওদুদ। বর্তমানে সেই রিটের শুনানি হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর বেঞ্চে মুলতবি রয়েছে।

এদিকে মওদুদ আহমদ ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের এ বাড়িটির মালিকানা নিয়ে নতুন করে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলাটি (দেওয়ানি মামলা নং ৫৬১/১৭) করেন। রাজউক ও সরকারের বিরুদ্ধে করা এ মামলায় কেউ যাতে তাকে হয়রানি না করে সে আবেদন করা হয়েছে।

প্রায় চার দশক ধরে বসবাস করে আসা এক বিঘা ১৩ কাঠা জমির ওপর ওই বাড়ি অবৈধভাবে দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর গুলশান থানায় মওদুদ ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুনুর রশীদ।

অভিযোগে বলা হয়, গুলশানের যে বাড়িটিতে মওদুদ আহমদ ও তার পরিবার থাকছেন, তার প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির কাছ থেকে এ বাড়ির মালিকানা এহসান পান। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্র এহসানের স্ত্রী অস্ট্রিয়ার নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে নিবন্ধন করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এহসান স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন। তারা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়। ওই বছরই মওদুদ ওই বাড়ির দখল নেন। এরপর ১৯৭৩ সালের ২ আগস্ট তিনি ইনজে মারিয়া প্লাজের নামে একটি ‘ভুয়া’আমমোক্তারনামা তৈরি করান এবং নিজেকে তার ভাড়াটিয়া হিসেবে দেখিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

দুদকের মামলায় বলা হয়, জিয়া সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী থাকাকালে মওদুদ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে গুলশানের ওই বাড়ি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দেয়ার চেষ্টা করেন। এর ধারাবাহিকতায় মাত্র ১০০ টাকা মূল্য দেখিয়ে ১৯৮০ সালে প্লটটি তিনি বরাদ্দ নেন। পরে তিনি একটি বায়নানামা ‘হাজির করেন, যেখানে দেখানো হয়, ওই বাড়ির মালিক ইনজে মারিয়া প্লাজ জনৈক মহসিন দরবারকে আমমোক্তার বানিয়েছেন এবং সেই মহসিন দরবার ১৯৮৫ সালে বাড়িটি মওদুদের সহোদর মনজুর আহমদের নামে বায়না করে দিয়েছেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031