রাজধানী আবারও শুরু হয়েছে বৃষ্টি কয়েকদিন বিরতির পর । গতকাল দিনের বেশ কিছু সময় ভারী বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়। রাতে কিছু সময় বিরতির পর সোমবার ভোর থেকে আবারও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সকাল ছয়টার পর হালকা বৃষ্টি পড়তে শুরু করে। এরপর কখনো মুষলধারে আবার কখনো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি পড়তে থাকে। এতে নগরীর অলিগলি ও অনেক সড়কে কাঁদাপানি জমে যায়। ফলে দুর্ভোগে পড়তে হয় অফিসগামী মানুষকে।
জলজটের পাশাপাশি যানজট দেখা দেয়ার দুর্ভোগ আরও চরমে পৌঁছেছে। ভারি বৃষ্টির কারণে অফিসগামী মানুষ ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের বেশি বিপাকে পড়তে হয়েছে। তারপরেও যানজট আর জলজটের সঙ্গে এক ধরনের যুদ্ধ করেই গন্তব্য যেতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
সকালে রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে গিয়ে দুর্ভোগের এমন চিত্র দেখা গেছে। সকাল থেকে ঢাকার আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যাওয়ার পরিবহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

দিলু রোডের বাসিন্দা আফজাল হোসেন কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য মগবাজার মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। পুরো শরীর ভেজা অবস্থায় তিনি ফ্লাইওভারের নিচে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। ‘বনানীতে অফিসে যাওয়ার বাসা থেকে বের হওয়ার পরই তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়। কিন্তু বৃষ্টির যে গতি তাকে কাছে ছোট ছাতা থাকলেও রেহাই পাওয়া যায়নি। পুরো শরীর ভিজে একাকার হয়ে গেছে।’
শুধু আফজাল হোসেনই নন, বাসের জন্য অপেক্ষমান অধিকাংশ যাত্রীর এমনই অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে। কারো প্যান্ট, পায়জামা ভিজে গেছে। আবার কারো পুরো শরীর ভিজে গেছে। বৃষ্টির পাশাপাশি গণপরিবহনের সংখ্যা কম থাকায় এবং ড্রেনের ময়লা পানির মিশে একাকার হয়ে এই দুর্ভোগ আরও চরমে পৌঁছেছে।
ভারী বৃষ্টিতে রাজধানীর অধিকাংশ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাজধানীর অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকায় পানি জমে গেছে। সেই পানিতে ভাসছে নোংরা-আবর্জনা। অনেক রাস্তায় জমেছে কাদাপানি। সেই সঙ্গে স্যুয়ারেজের পানি উপচে পড়ছে।

জলাবদ্ধতার সঙ্গে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় সড়কে যান চলাচল কিছুটা কম দেখা গেছে। ফলে বৃষ্টিতে ঘর থেকে বের হয়ে গন্তব্যে যেতে লোকজনকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। অন্যদিকে সুযোগ বুঝে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন।
শ্যামলীতে যাওয়ার জন্য বাংলামোটর মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন বেসরকারি চাকরিজীবী শান্ত মিয়া। তিনি জানান, আকাশের অবস্থা খারাপ দেখে সকাল আটটার দিকে শ্যামলীতে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়েছি। এখন সোয়া আটটা বাজছে। এখনো কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। মাঝে মাঝে দুএকটি গাড়ি আসলেও তাতে যাত্রীতে ঠাসা। সিএনজি অটোরিকশা থাকলেও সুযোগ বুঝে তারা অনেক ভাড়া চাচ্ছেন।
আবহাওয়া অফিস বলছে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় রাজধানীতে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। সারা দেশেই মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেটেও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে ৫৫ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
