অং সান সু চি তার দেশবাসীর উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছেন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী , তা প্রত্যাখ্যান করলেও সেখানে প্রাথমিক অর্জন দেখছেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেছেন, সু চির বক্তব্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার স্বীকৃতি মিলেছে।

তিনি বুধবার সচিবালয়ে অ্যাসোসিশেন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (এটকো) সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।

এর আগে মঙ্গলবার মিয়ানমার সরকারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেন, রাখাইন থেকে মুসলমানদের পালিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার খবরে তারা (সরকার) উদ্বিগ্ন। তবে, বেশির ভাগ মুসলিমই রাখাইন রাজ্য ছেড়ে পালায়নি। সেখানে সহিংসতা প্রশমিত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রচারমাধ্যম রোহিঙ্গাদের নিয়ে অতিরঞ্জিত খবর প্রকাশ করছে বলে দাবি করেন সু চি। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে যাচাই সাপেক্ষে শরণার্থীদের ফেরত নেওয়ার কথা বলেন।

সু চি তার বক্তব্যে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমার নাগরিকদের রোহিঙ্গা না বলে মুসলিম বলে উল্লেখ করেন।

সু চি রোহিঙ্গা ইস্যুকে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের দ্বিপক্ষীয় বিষয় হিসেবে রাখতে চাইছেন উল্লেখ করে ইনু বলেন, ‘কিন্তু রোহিঙ্গা সংকট আন্তর্জাতিক সমস্যা। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন ত্রিপক্ষীয়ভাবে করতে হবে। বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনায় তাদের তালিকা হবে; নাগরিকত্ব, ক্ষতিপূরণ ও পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

সু চির বক্তব্যে রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার স্বীকৃতি মিলেছে দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা একটা বিশাল অগ্রগতি। কূটনৈতিক তৎপরতাসহ ত্রিমুখী ভূমিকার কারণে সু চি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন। এই জায়গাটাকে আমি প্রাথমিক অর্জন হয়েছে বলব।’

তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কেউ কেউ যুদ্ধের উসকানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ইনু। তিনি বলেন, মিয়ানমারের ভেতরে যেমন, তেমনি বাংলাদেশের মধ্যেও উসকানি রয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে কোনো ধরনের উসকানি না দিতে আহ্বান জানান।

সামরিকভাবে সমাধান নয়, কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে সমাধান দেখছেন তথ্যমন্ত্রী। ‘যুদ্ধ করে কিছু এলাকায় ঢুকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে বসিয়ে আমাদের সেনাবাহিনী যখন চলে আসবে, তখন আবার ওদের (রোহিঙ্গা) বের করে দেবে।’

এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পেরেছেন।

তথ্যমন্ত্রী রোহিঙ্গা ইস্যুতে গণমাধ্যমের ভূমিকারও প্রশংসা করেন। তিনি এ ব্যাপারে ধারাবাহিকভাবে প্রচার চালিয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যঅহত রাখার আহ্বান জানান।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031