মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে দেশটির উপর কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণহত্যা ও নির্যাতনের ‍মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের । তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ, প্রয়োজনে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে।

শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রোহিঙ্গা সমস্যার জরুরি সমাধান এবং বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন ফখরুল। মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ বৌদ্ধ নাগরিক ঐক্য নামে একটি সংগঠন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনী ঘোষণা দিয়েছে। মিয়ানমার কখনো মাথা নিচু করবে না। তাই সবাইকে নিয়ে তাদের চাপ প্রয়োগ করতে হবে। কূটনৈতিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করতে প্রয়োজনে মিয়ানমারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করতে হবে।’

দুঃখ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা আমাদের পাশে না দাঁড়িয়ে মিয়ানমারের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের সাতটি দেশের মধ্যে চীন ও রাশিয়ার কারণে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

এখন পর্যন্ত সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন ও রাশিয়াকে কনভিন্স করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফখরুল। বলেন, ‘আমরা অন্য কোনো দেশ নিয়ে মাথা গলাতে চাই না। আমাদের অভ্যন্তরে অন্য কেউ নাক গলাবে আমরা এটাও চাইনা। আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এসেছে। অথচ সরকার নিন্দাও জানায়নি। এটাকে আগ্রাসন মনে করতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক সরকার চাই। নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। এজন্য কাজও করছি। স্বৈরাচারি সরকারের গত ৮ বছরের নির্যাতনের কারণে আমরা বহু ত্যাগ শিকার করেছি। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে এখনো সরে যাইনি। বাংলাদেশে তো গণতান্ত্রিক সরকার নেই। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে এমন সমস্যা হতো না। একটা গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকলে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমস্যাটি থাকতো না।’

জাতিসংঘের মহাসচিবের বরাত দিয়ে ফখরুল বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। এরপর কোনদিকে কোন মোড় নিবে আমরা সহজে বলতে পারি না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন সাম্প্রতিক সম্প্রীতি নষ্ট হয়। আমরা ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। প্রতিটি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই।’

বাংলাদেশ বৌদ্ধ নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়ার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ২০ দলীয় জোটের মোস্তফা জামাল হায়দার, মেজর জেনারেল ইবরাহীম (বীর প্রতীক), জেবেল রহমান গনি, জাহানারা পারভীন, মাওলানা আবদুর রব, ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, আহম্মদ আবদুল কাদের প্রমুখ।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031