৩০ হাজার গর্ভবতী নারী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রয়েছে । এর মধ্যে এক থেকে সাত মাস সময়কালের গর্ভবতী নারীর সংখ্যাই বেশি। ইতিমধ্যে সাত হাজার তিনশ’ ৬০ জন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কেন্দ্রগুলোর ডাক্তারদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া, ২৫শে আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত ক্যাম্পগুলোতে ছয়শ’ শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। বিষয়টি সম্পর্কে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল জানান, রোহিঙ্গা নারীদের গর্ভবতী হওয়ার হার বেশি। বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এমনটাই দেখতে পাচ্ছি আমরা। এটা কিভাবে কমিয়ে আনা যায় আমাদের ওই সে চেষ্টা থাকবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাত লাখ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে
এক লাখ ৩৭ হাজার একশ’ জনকে সিজেলস রুবেলা বা এমআর ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। ৭৩ হাজার ৩২০ জনকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এরই মধ্যে এক লাখ ৫৪ হাজার ৭৬৮ জনকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় অধিবাসীসহ ১২ লাখ লোককে কলেরা ভ্যাকসিন দেয়ার প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে ১০ হাজার ২৯৯ জন এতিম শিশু বাংলাদেশে এসেছে। এ বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর জরিপ শুরু করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে তাদের সেবাযত্ন করা হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৪ই আগস্টের পর থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে আসা অব্যাহত রয়েছে। ৪ঠা অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ লাখ ১৯ হাজার আশ্রয়প্রার্থী এদেশে প্রবেশ করেছে। এর আগে আশ্রয়প্রার্থীদের লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আশ্রয়প্রার্থীদের প্রবেশ বেড়ে যাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা সাত লাখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এমন অবস্থার কারণে ক্যাম্প স্থাপনে তিন হাজার একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার সুবিধার জন্য নতুন ক্যাম্প এলাকাকে ২০টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি ব্লকের দায়িত্ব একজন কর্মকর্তাকে দেয়া হয়েছে। এসব ব্লক পরে ক্যাম্পে রূপান্তর করা হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার সম্মতি দিয়েছে। আগামী নভেম্বর মাস থেকে চালের পাশাপাশি অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য সরবরাহের বিষয়েও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ডব্লিউএফপি। এদিকে ২০১৬ সালে বাংলাদেশে আসা অনিবন্ধিত মিয়ানমার নাগরিকের সংখ্যা ৮৭ হাজার। ২৫শে আগস্ট থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৩৭ হাজার। সব মিলিয়ে ছয় লাখ ২৪ হাজার মিয়ানমার নাগরিক বাংলাদেশে বসবাস করছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় অনুমান করছে, ২০১৬ সালের আগে ৩-৫ লাখ মিয়ানমার নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাই জেলা প্রশাসনের আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে নয় লাখ ২৬ হাজার ৪৩১ জন বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক বাংলাদেশে অবস্থান করছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031