জাতীয় দলের হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে পদত্যাগ করেছেন । আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ মর্মে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটের জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো। তাতে দাবি করা হয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম এই কোচ নিজের বাসস্থান অস্ট্রেলিয়া থেকে মেইলে বিসিবির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।
ওই প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে বাংলাদেশের অধিকাংশ মিডিয়াও হাথুরুর পদত্যাগ নিয়ে প্রতিবেদন করে। কিন্তু হাথুরুর পদত্যাগ বিষয়ে কোনো চিঠি বিসিবির কাছে যায়নি বলে জানান ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান।
কোচের পদত্যাগপত্র সাধারণত ক্রিকেট অপারেশন কমিটির কাছেই যায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকাল চারটা পর্যন্ত এ ধরনের কোনো চিঠি তারা পাননি বলে জানান আকরাম খান। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘না, আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো চিঠি আসেনি। শুনেছি শ্রীলঙ্কার কোনো একটা নিউজপেপারে এ ধরনের খবর এসেছে। কিন্তু আমরা কোচের কাছ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো চিঠি পাইনি।’
যদি পদত্যাগপত্র পায় বিসিবি, সে ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে- এমন পশ্নের জবাবে আকরাম খান বলেন, ‘যখন আসে তখন এটা নিয়ে ভাবা হবে। আপাতত আমরা এ নিয়ে ভাবতে চাই না।’
একই কথা বলেছেন মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে এ ধরনের কোনো চিঠি এখনো বিসিবির কাছে আসেনি।’ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন ক্রিকেট বিসিবির অন্যতম পরিচালক মাহবুব আনাম।
বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা সংবাদমাধ্যম থেকে এ বিষয়ে জেনেছি। সুতরাং, এ বিষয়ে আমি বেশি কিছু বলতে পারবে না। তারপরও আমি বলব কোচ তার দায়িত্বে থাকবেন কি থাকবেন না এটি তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার’।
হাথুরুর সঙ্গে বিসিবির চুক্তি ২০১৯ সাল পর্যন্ত। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ মাথায় রেখে গত বছর জুনে তার সঙ্গে নতুন করে তিন বছরের চুক্তি করে বিসিবি। ২৩ হাজার ডলার মাসিক বেতন বেড়ে হয় প্রায় ২৬ হাজার ডলার। সঙ্গে আরো অনেক সুযোগ-সুবিধা। আর একচ্ছত্র ক্ষমতা তো আছেই।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দলের বাজে ফল এবং নানা ইস্যুতে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির জন্য সম্প্রতি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন কোচ। খোদ বিসিবিতে তাকে নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কদিন আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, প্রয়োজনে কোচকে ঢাকায় এনে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ব্যর্থতায় কারণ জানতে চাওয়া হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষে গত ৩১ অক্টোবর দল ঢাকায় এলেও কোচ হাথুরুসিংহে সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়া চলে যান।
হাথুরুর পদত্যাগ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রকাশিত ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, শ্রীলঙ্কান জাতীয় দল হাথুরুকে কোচ হিসেবে পেতে চায়। দুই পক্ষ ইতিমধ্যে অনেকটা সমঝোতায়ও উপনীত হয়েছে। আর এর পরই হাথুরু বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
গত বছরের অক্টোবরে একবার চাকরি ছাড়তে চেয়েছিলেন হাথুরু। তবে সেবার তার সঙ্গে আলোচনায় বসে ব্যাপারটা মীমাংসা করে নেয় বিসিবি। তবে চলতি বছর শ্রীলঙ্কা সফরের সময় তিনি জানান, শ্রীলঙ্কা দলের প্রস্তাব পেলে অবশ্যই তিনি তাতে রাজি হবেন।
২০১৪ সালের মাঝামাঝিতে দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ দলের কোচ হয়ে আসেন এই শ্রীলঙ্কান। গত বছরের মাঝামাঝিতে আরো তিন বছরের জন্য চুক্তি করা হয় তার সঙ্গে। শ্রীলঙ্কান এ কোচের অধীনে গত তিন বছরে বাংলাদেশ বড় দল হয়ে ওঠে। সাফল্য আসে একের পর এক। তবে নানা কারণে সম্প্রতি কোণঠাসা হয়ে পড়েন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।