সৌদি আরবের সঙ্গে তেল আবিবের গোপন সম্পর্ক রয়েছে ইসরায়েলের একজন মন্ত্রী প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন। ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী ইউভাল স্টেনিটজ রবিবার ‘আর্মি রেডিও’ -কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই গোপন তথ্য ফাঁস করেছেন।

তিনি বলেন, ‘বহু মুসলিম ও আরব দেশের সঙ্গে আমাদের সত্যিকার গোপন সম্পর্ক রয়েছে এবং সাধারণভাবে এ ক্ষেত্রে আমাদের লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই।’

তিনি আরো বলেন, সৌদি আরবই চেয়েছে ইসরায়েলের সঙ্গে তার সম্পর্ককে গোপন রাখতে এবং রিয়াদের এই ইচ্ছা পূরণে তেল আবিবের কোনো সমস্যা ছিল না।’

ইসরায়েলি জ্বালানিমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরব হোক বা অন্য কোনো আরব দেশ হোক কিংবা অন্য কোনো মুসলিম দেশ হোক- যখন তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শক্তিশালী হয় তখন তাদের ইচ্ছাকে আমরা সম্মান জানাই। আমরা সে সম্পর্ককে গোপন রাখি।’

সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে ইসরায়েলের কি লাভ- এমন প্রশ্নের উত্তরে স্টেনিটজ বলেন, ‘সৌদি আরবসহ আধুনিক আরব বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ ইরানকে প্রতিহত করার কাজে আমাদেরকে সহযোগিতা করে। ইরানের সঙ্গে পাশ্চাত্যের পরমাণু সমঝোতার বিরুদ্ধে আমরা যখন সংগ্রাম করছিলাম তখন এই আধুনিক আরব বিশ্ব আমাদের সহযোগিতা করেছে। এমনকি এই মুহূর্তে আমরা যখন আমাদের উত্তর সীমান্তে, (অর্থাৎ) সিরিয়ায় ইরানের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের বিরুদ্ধে বিশ্বকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি তখন সুন্নি আরব বিশ্ব আমাদেরকে সহযোগিতা করছে।’

ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রীর এই বক্তব্যের কয়েকদিন আগে দখলদার সরকারের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফট্যানেন্ট জেনারেল গ্যাদি এইজেনকোট বলেছিলেন, ইরানকে প্রতিহত করার যৌথ প্রচেষ্টায় সৌদি আরবকে গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে তেল আবিব প্রস্তুত রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সৌদি-মালিকানাধীন অনলাইন পত্রিকা এলাফকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জেনারেল এইজেনকোট দাবি করেন, ‘ইরান হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান হুমকি এবং দেশটি গোটা মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।’

গত কয়েক মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, ইসরায়েল ও সৌদি আরব পূর্ণ মাত্রার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করার পরিকল্পনা করছে।

গত জুনে প্রকাশিত এক খবরে জানা যায়, ফিলিস্তিনি ভূমি জবরদখল করে ৬৯ বছর আগে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো তেল আবিব ও রিয়াদ আনুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরব ও মার্কিন সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য টাইমস এ খবর দেয়।

রিপোর্টে বলা হয়, এই সম্পর্ক হবে ধীরে ধীরে ও ধাপে ধাপে। প্রথমে বিভিন্ন ইসরায়েলি কোম্পানিকে সৌদি আরবে দপ্তর ও শোরুম খোলার অনুমতি দেবে রিয়াদ। এরপর ইসরায়েলের বিমানের জন্য সৌদি আরবের আকাশসীমা খুলে দেয়া হবে।

সূত্র: পার্স টুডে

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031