বাংলাদেশের জাতীয় জোটের (বিএনএ) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় যোগ দেননি । বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) আলোচিত-সমালোচিত সাবেক এই মন্ত্রী ও নেতা ওই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন।

নাজমুল হুদার জন্য ঘণ্টা খানেক অপেক্ষার পর অবশেষে তাকে ছাড়া নিজেরাই আনু্ষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠান শুরু করে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর এর সমাপ্তি টানেন আয়োজকরা। নাজমুল হুদার অনিুপস্থিতির ঘটনায় বিস্মিত হয়েছেন আয়োজকরা।

সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে তার সাবেক দল বিএনপির সমালোচনার সুযোগ পেলে তা যেমন ছাড়তে চান না নাজমুল হুদা, তেমনি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষে বলা কিংবা প্রশংসা করার সুযোগ পেলে তা লুফে নিতে ভুল করেন না। কিন্তু আজ তেমনই একটি আয়োজনে অনুপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ১৪ দলীয় জোটে যেতে এমনকি নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী এই নেতা।

গত কিছু দিন ধরে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণটি বারবার আলোচিত হচ্ছে একটি স্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে। সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের ৭৭টি ঐতিহাসিক নথি ও প্রামাণ্য দলিলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’হিসেবে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’যুক্ত করেছে জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেসকো।

এদিকে একজন আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ৭ মার্চের ভাষণের দিনটিকে কেন জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।

এসব প্রেক্ষাপটে রাজধানীর তোপখানা সড়কের বিএনএ হলরুমে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক মুক্তি আন্দোলন আয়োজিত ৭ মার্চের আলোচনা সভাটি মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। বিএনএর চেয়ারম্যান নাজমুল হুদার দেরি দেখে আয়োজকরা বিকেল চারটায় সভা শুরুর ঘোষণা করেন। ওই সময়ের মধ্যেও বিএনপির এই সাবেক মন্ত্রী উপস্থিত না হওয়ায় আয়োজক দলটি নিজেদের সাত-আটজন কর্মী নিয়ে আলোচনা সভা শুরু করে।

সভায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি আশরাফ আলী হাওলাদার, দলটির আহ্বায়ক অলিউল্লাহ চৌধুরী ও জয় বাংলা মঞ্চের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ীসহ উপস্থিত অফিস কর্মচারীরা ৭ মার্চকে জাতীয় দিবস ঘোষণার দাবিতে বক্তব্য দেন।

বিএনপির রাজনীতিতে সব সময়ই প্রবলভাবে আলোচিত ও সমালোচিত ছিলেন নাজমুল হুদা।  দল থেকে তিনি বহিষ্কৃত হওয়ার পর আবার ফিরেও এসেছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। পরে আবার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানাতে তার দাবি পূরণ করেননি, এই অভিযোগে ২০১২ সালের জুন মাসে পদত্যাগ করেন তিনি।

ওই বছরের ১০ আগস্ট বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট (বিএনএফ) নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন নাজমুল হুদা। সেটি থেকেও পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারের পর গঠন করেন তৃণমূল বিএনপি। বহিষ্কারের অপর পক্ষের নেতা আবুল কালাম গত ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসনে (গুলশান এলাকা) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

আর নাজমুল হুদা বর্তমানে দেশের নামস্বর্বস্ব কিছু দল নিয়ে বিএনএ নামের ১৪-দলীয় জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই জোট নিয়ে তিনি যোগ দিতে চান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে।

শোনা যাচ্ছে বর্তমানে বিএনপির কড়া সমালোচক নাজমুল হুদা আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চান ঢাকা-১৭ আসনে (গুলশান এলাকা)। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ থেকে ‘কিছুটা’আশ্বাস পেয়েছেন বলেও দাবি তার।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031