চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সংলগ্ন এলাকায় কথা কাটাকাটির জের ধরে পুলিশ ও ছাত্রলীগের মাঝে তুমুল কাণ্ড ঘটে গেছে । গতকাল রাত ১০টার দিকে এ ঘটনার সময় গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে তিন পুলিশ সদস্যসহ ৪/৫ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে কনস্টেবল ফিরোজকে হাসপাতালের ২৮ নং ওয়ার্ডে এবং কনস্টেবল মাহমুদকে ১৯ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন এএসআই শীলব্রত বড়ুয়াও। পরে রনক নামের এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের এক নেতার সাথে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত পুলিশের কনস্টেবল মাহমুদের মাঝে কথা কাটাকাটির জের ধরে এ ঘটনার সূত্রপাত। বাক–বিতন্ডার এক পর্যায়ে দুই পক্ষই হামলায় লিপ্ত হয়। এক ফাঁকে ছাত্রলীগের ওই নেতা মুঠোফোনে কল করে দলবল নিয়ে আসে। এসময় ছাত্রলীগের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা–কর্মী ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পুলিশের উপর হামলা করে। পরে খবর পেয়ে পাঁচলাইশ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স আসে। কম হলেও তিন গাড়ি ফোর্স এসে ছাত্রলীগকে ধাওয়া দেয়। পাঁচলাইশ জোনের এসি ও পাঁচলাইশ থানার ওসি (তদন্ত) সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে ধাওয়া দিয়ে রনককে আটক করে পুলিশ। পুলিশ সদস্য আহত ও একজনকে আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম। তবে আহত সহকর্মীকে নিয়ে ছুটোছুটিতে থাকায় বিস্তারিত জানাতে পারেন নি তিনি।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন–হঠাৎ করেই হাসপাতাল এলাকায় ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গোটা হাসপাতাল এলাকায় ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। সবাই ভীত–সন্ত্রস্ত। হাসপাতালের পূর্ব গেট দিয়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সাইরেন বাজিয়ে পুলিশের পরপর কয়েকটি গাড়ি ঢুকে হাসপাতালে। চলে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া। অনেককে দিগবিদিক ছুটতে দেখা যায়।
আটক রনকই পুলিশের উপর হামলা করে জানিয়ে ওই সময় জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত নায়েক আমির আজাদীকে বলেন, আমি নিজে তাদের (ছাত্রলীগকে) নিবৃত্ত করতে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা কথা শুনেন নি। আমাদের সহকর্মীর উপর হামলা করেছেন। তারা হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িটিও ঘিরে ফেলে। সহকর্মী কনস্টেবলের সাথে অসম্মানজনক (পাত্তা না দিয়ে) আচরণ করায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি পুলিশের। এরা এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের নেতা–কর্মী বলে দাবি করে পুলিশ বলছে– আটক রনক এমএইস কলেজ ছাত্রলীগের নেতা।
এদিকে, আটক রনকও এ ঘটনায় আহত বলে জানা গেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (গতকাল রাত বারটায়) তাকে হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে রাখার তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। তবে পরবর্তীতে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলেও হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরতরা জানিয়েছেন। ঘটনাস্থলে যাওয়া পাঁচলাইশ থানার ওসি (তদন্ত)’র সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেন নি।
