একজন আইনজীবী ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকীতে আদালতে হাজিরা থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে রেহাই দিয়েছেন বিচারক। তারপরও বিএনপি নেত্রী আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন ।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে খালেদা জিয়া পুরান ঢাকার বকশিবাজারে বিশেষ জজ আদালতে হাজির হন। তবে বেলা দুইটা পর্যন্ত তাকে অপেক্ষায় থাকতে হয়।
ঢাকা আদালতের যেসব আইনজীবী মারা গেছেন তাদের ‘ডেথ রেফারেন্স’ উপলক্ষে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় বেলা দুইটায়। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় বিএনপি নেত্রী আদালত কক্ষে বসে থাকেন।
এরপর এই মামলার আসামি সরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবী আহসান উল্লাহ। বুধবারও তিনি যুক্তি উপস্থাপন করবেন।
খালেদা জিয়ার যুক্তি উপস্থাপন শেষে শরফুদ্দিনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয় ১৬ জানুয়ারি। সেদিন শেষ না হওয়ায় ১৭ ও ১৮ যুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী। আগামী ২৩, ২৪ এবং ২৫ জানুয়ারিও যুক্তি উপস্থাপনের দিন নির্ধারণ করেছে আদালত।
খালেদা জিয়ার যুক্তি উপস্থাপন শেষে অন্য আসামিদের মুক্তি উপস্থাপনের সময় আদালতে হাজিরা থেকে রেহাই চেয়ে জামির আবেদন করেছিলেন বিএনপি নেত্রী। তবে সে সময় বিচারক তা নাকচ করেন। তবে আজ খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন গ্রহণ করেন বিচারক আখতারুজ্জামান।
খালেদার আইনজীবীরা জানান, বুধবার খালেদার ছোট ছেঠে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী। এদিন যেন তাকে হাজিরা থেকে রেহাই দেয়া হয়। পরে এই আবেদন গ্রহণ করেন বিচারক। তবে তিনি জানান খালেদার সঙ্গে এই মামলার আসামি সরফুদ্দিন আহমেদ ও কাজী সালিমুল হকের পক্ষে যুক্তিতর্ক চলবে। তবে খালেদা জিয়া জামিনে থাকবেন। যেহেতু উনার পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ তাই তার আইনজীবীদেরও থাকার প্রয়োজন নেই।
খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে কোকো ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে মারা যান। তিন দিন পর মরদেহ ঢাকায় আনার পর তা সমাহিত করা হয়।
তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ঢাকাটাইমসকে জানান, জামিন পেলেও বিএনপি নেত্রী বুধবার আদালতে যাবেন। কারণ জানতে চাইলে সানাউল্লাহ বলেন, ‘আমরা বুধবার আদালত মুলতবি চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা না করায় বেগম খালেদা জিয়া আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ঢাকাটাইমসকে বলেন, এই মামলায় কিন্তু পলাতক আসামিদের পক্ষে কোনো যুক্তি উপস্থাপন হবে না।
কাজল বলেন, ‘এই মামলার সাজা যেহেতু যাবজ্জীবন তাই রাষ্ট্রনিযুক্ত কোনো আইনজীবী তাদের পক্ষে নেই। সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় একটি মামলা করে দুদক।
খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান ছাড়া এই মামলায় বাকি আসামিরা হলেন সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।
তারেক রহমান গত নয় বছর ধরে দেশের বাইরে, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
