বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হতে আসা এক শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে তাকে আটক করা হয়। আটক হওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম জাহেদুল ইসলাম জিসান। এ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করা হয়। তারা আইফোন ও সাড়ে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে ওই শিক্ষার্থীর সাথে অভিনব এ জালিয়াতিতে চুক্তিবদ্ধ হন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সনদ, সিল মোহর ও ব্যাংক রসিদ জালিয়াতি করে ২০১৭–১৮ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেটিং বিভাগে ভর্তি হতে আসে ওই শিক্ষার্থী। সে বিভাগের ভর্তি ফরম নেওয়া থেকে শুরু করে ব্যাংকে টাকা দেওয়ার রশিদ পর্যন্ত তৈরি করে ফেলেছিল। তবে কাগজপত্রগুলো ছিল ভুয়া। তাকে এই কাজে সহযোগিতা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া দুই শিক্ষার্থী। কিন্তু যে আইডি নম্বরে ভর্তি হবে তাতে ইলোরা নামের আরেকজন আগেই ভর্তি হয়েছিলেন। একই আইডিতে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে গেলে বিষয়টি ক্যাশে থাকা কর্মকর্তার নজরে আসে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডিকে খবর দিলে ওই শিক্ষার্থীকে প্রক্টরের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এসময় জিজ্ঞাসাবাদে সে এ কাজে চবির দুই শিক্ষার্থী জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে বলা হয়েছে, আটক জিসানের বক্তব্য অনযায়ী চবির ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন আরবী বিভাগের সাদ্দাম হোসাইন এবং আইইআর ইন্সটিটিউটের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জুলকার নাইন। তারা দু‘জনেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবি সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র আজাদীকে বলেন, ‘জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হতে আসা এক শিক্ষার্থীকে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। সে জালিয়াতির সাথে জড়িত চবির দুই শিক্ষার্থীর নাম আমাদের বলেছে। আমরা তাদের সনাক্ত করেছি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে জিসান স্বীকার করেছে ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলে সে অপেক্ষমান তালিকায় ছিল। পরে ভর্তির জন্য সে একটি চক্রের সাথে যোগাযোগ করে। তারা সাড়ে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। এ বাবদে সে কিছু টাকা পরিশোধ করলে ওই চক্রের লোকেরা তাকে এসব জাল রশিদ ও কাগজপত্র দেয়।’

বাংলানিউজ জানায় : বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা জিসানকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করি। তারপর তার ডকুমেন্ট যাচাই করে দেখি সব কাগজপত্র ভুয়া। পরে সে স্বীকার করে আরবি বিভাগের সাদ্দাম হোসেন ও আইইর ইনস্টিটিউটের জুলকার নাইনের সহায়তায় ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ভর্তি হতে চেয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘ওই দুইজনের বিরুদ্ধে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেব। এর সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কীনা সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে। কেউ ছাড় পাবে না।’

আটক জিসান সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা এলাকার বাসিন্দা বলে বিডিনিউজের এক খবরে বলা হয়েছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031