বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা বাংলাদেশের বিচার বিভাগ চাপে আছে বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগ যে আন্ডার ইনফ্লুয়েন্স (প্রভাবান্বিত) এবং আন্ডার ট্রিমেন্ডাস থ্রেট (ভীষণ হুমকির মুখে) সেটা আমার মনে হয় আমাদের পূর্ববর্তী বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ওনার পরে বিষয়টা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই।’

বুধবার বেসকারি টেলিভিশন ইনডিপেনডেন্টের টকশো আজকের বাংলাদেশে অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। খালেদ মুহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় টকশোর বিষয় ছিল হাইকোর্ট-সুপ্রিম।

রুমিন ফারহানা ছাড়াও টকশোতে আলোচক হিসাবে ছিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টির বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শেখ মো. টিপু সুলতান এবং এবি নিউজ টোয়েন্টি ফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক সুভাষ সিংহ রায়।

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এই মামলাটিতে যে সাজা দেয়া হয়েছে পাঁচ বছরের দণ্ড সেটাকে আমরা শট সেন্টেন্স বলি। শট সেন্টেসে সাধারণত দেখে আসছি আপিল অ্যাডমিশনের সঙ্গে সঙ্গে বেইল (জামিন) দিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এটা সেই মামলা  যেখানে সঙ্গে সঙ্গে বেইল না দিয়ে নথি কল করা হলো। এবং সেই নথি কলে করে ১৫ দিন সময় দেয়া হলো।’

‘১৫ দিন পরে যখন নথি আসলো তখন শুনানি করে জামিন দেয়া হলো। তার একদিনও পার হতে পারলো না সরকার এবং দুদক দুজনের দৌড় দিল চেম্বার কোর্টে। চেম্বার কোর্ট থেকে যখন ফুল বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়া হলো তখনই ঘটলো দুঃখজনক ঘটনা। চেম্বার কোর্ট থেকে যখন ফুল বেঞ্চে গেল তখন নিয়ম ছিল দুই পক্ষেরই আর্জি শোনা।’

‘আপনি নিশ্চয়ই গণমাধ্যমগুলোতে দেখেছেন শুধুমাত্র সরকার পক্ষকে শুনবার পরে, দুদককে শুনবার পরে বেগম খালেদা জিয়ার যারা ল ইয়ার ছিল তাদের কথা শোনা হয়নি। এবং ওনারা বারবার শুনানি করতে চেয়েছেন, বারবার বলেছেন আমাদের বক্তব্যটা আপনারা শুনুন। কিন্তু কেন বিএনপির ল ইয়ারের কথা কেন শোনা হলো না। এটা নজিরবিহীন।’

‘একটি মামলা যখন কোনো কোর্টে যায় কোর্ট দুপক্ষের কথা শুনে হয়তো স্টে দেবে, নয়তো স্টে দেবে না। স্টে দেয়াটা বা না দেয়াটা আমার পয়েন্ট না। আমার পয়েন্টটা হলো আমাকে শোনা হলো না কেন। এবং একটা পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বললেন যে, আমাকে আপনারা থ্রেট দেবেন না। কিন্তু ওনাকে থ্রেট দেয়া হয়নি। বারবারই বলা হচ্ছিল আমাদের শোনেন।’

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আসলে আমার যতদূর মনে হয় বেগম জিয়ার বতর্মান যে অবস্থাটা এটার সঙ্গে আইন আদালতের কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে কোনো কোনো আইনজীবী ভি চিহ্ন দেখিয়েছেন। আমি তার রাজনৈতিক মেধা সম্বন্ধে সন্দিহান। পুরো বিষয়টা হলো রাজনৈতিক।’

‘যতক্ষণ পর্যন্ত এটা রাজনৈতিকভাবে সমাধান না হবে ততক্ষণ না পর্যন্ত এই সংকটের সমাধান হবে না। কারণ বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা আছে। এসব মামলায় খালেদা জিয়া একের পর এক গ্রেপ্তার হতে থাকবেন। এবং তিনি সহসাই যে আলো বাতাস দেখবেন বলে আমি মনে করি না।’

শেখ মো. টিপু সুলতান বলেন, ‘এখানে আজকের টকশোতে দুইজন আইনজীবী আছেন একজন উচ্চ আদালতে প্র্যাকটিস করেন। আমি আগে আইন প্র্যাকটিস করতাম। সংসদ সদস্য হওয়ার পর সেই সুযোগ নেই। প্রতিটা বেলায়ই আমরা দেখেছি আপিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জামিন দেয়, এটা কিন্তু সঠিক না। ওখানে জামিনের জন্য নিম্ন আদালতে জামিনের জন্য নথি তলব করা হয়। উভয়পক্ষকে অর্থাৎ রাষ্ট্রপক্ষকে শোনার সুযোগ দেয়া হয়। তবে আদালত রায় দিলে তার বিরুদ্ধে হৈ চৈ করতে হবে এটা আইনের ভাষা নয়।’

সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ কি বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাস নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত? এই প্রেক্ষাপটগুলো কেন এসেছে? আইনজীবীরা কি তাদের আইনের ভাষায় কথা বলছেন? আপনি যদি হৈ চৈ করে আদালতের সময়টায় নষ্ট করে দেন তবে কেন আপনাদের কথা শুনবেন?।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031