জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলায় বিরক্ত। বাংলাদেশের কেউ বিদেশে গেলে এই কাজটি করে না জানিয়ে তিনি একে নিজের দেশের বদলে অন্যের দেশকে ভালোবাসা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে ‘সবুজ পরিবেশ আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে মাশরাফি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের ক্রিকেট তারকা বলেন, ‘আমরা যখন বাইরের দেশে যাই তখন ময়লা ফেলতে ময়লার বিন না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করি। আর আমরা এখানে যখন কিছু খাই ময়লাটা যেখানে ইচ্ছা ফেলে দিচ্ছি। তার মানে আমরা নিজের দেশকে ভালো না বেসে অন্যের দেশকে ভালোবাসি। সুতরাং এই বিষয়গুলোতে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।’
ঢাকার পরিবেশ ‘এক্সট্রিম’ পর্যায়ে চলে গেছে উল্লেখ করে পরিবেশ নিয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান মাশরাফি।
সবুজ পরিবেশের জন্য কেন আন্দোলন করতে হবে-এই প্রশ্ন করে মাশরাফি বলেন, ‘সবুজ পরিবেশ তো আমাদের ছিল এবং থাকবে এটাই আমরা আশা করি। তার পরও যেহেতু পরিস্থিতি এই দিকে নাই।’
‘বিশেষ করে ঢাকা ও চট্রগ্রামের শহরে। ঢাকার বাইরের দিকে যদি আমরা তাকাই তাহলে দেখা যাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কিছুটা পাওয়া যায়। এগুলোকে আরেকটু সংরক্ষণ করলে আরও ভালো কিছু পাওয়া যাবে।’
একটি গাছ কাটলে ২০টি গাছ রোপনের আহ্বানও জানান মাশরাফি। বলেন, ‘এক সময় আমি দেখেছি, গাছ কেটে পরিবারের সদস্যের চিকিৎসা করানো হয়েছে, মেয়ের বিয়ের খরচ দিতে গাছ বিক্রি করা হয়েছে। আর এখন রাস্তা বানানোর জন্য গাছ কাটা হচ্ছে। একটা গাছ বড় হতে ২০-২৫ বছর লাগে, তাই একটি গাছ কাটলে ২০টি গাছ লাগান।’
ঢাকার নদী দূষণ রোধেও যার যার অবস্থান থেকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান জাতীয় ক্রিকেট দলের এই তারকা।
শুরুতে জাতীয় সংগীত ও পায়রা উড়িয়ে অতিথিরা অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করেন। এরপর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। পরে অথিতিরা সবাই সবুজ পরিবেশ আন্দোলনের আগামী দিনের পথচলার সফলতা কামনা করেন।
এ সময় নিহাদাস ট্রফির ফাইনালে ভারতের সাথে হেরে যাওয়া নিয়েও কথা বলেন মাশরাফি। বলেন, ‘ক্রিকেট নিয়ে কী বলব? মনটা একটু খারাপ আছে সবারই। তাই খেলা নিয়ে কথা বলতে চাই না। সামনে ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ জিতবে।’
অনুষ্ঠানে উদ্ধোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ। সবুজ পরিবেশ আন্দোলনের সমন্বয়ক দেলোয়ার হোসেন এতে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য একে আজাদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর আতিউর রহমান, ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কামরুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
