Magura_Madrasa_Student_Tortured_হাফেজ বানাতে আবদুল আলিম তারছেলেকে শিশু সন্তানকে পায়ের সঙ্গে শেকল বেঁধে দিয়েছিলেন। আর সেই শেকলের সঙ্গে ভারি কাঠ বেঁধে রেখে এসেছিলেন মাদরাসায়।

কিন্তু হাফেজি শিক্ষায় অনিচ্ছুক তার সন্তানটি শেষ পর্যন্ত ভারি কাঠযুক্ত শেকল নিয়েই পালিয়ে আসে মাগুরায়। আবুজার নামে ১২ বছরের ওই শিশুটি এখন মাগুরা সদর থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

আবুজারের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, তার গ্রামের বাড়ি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ইন্দ্রা গ্রামে। ৫ বছর আগে তার বাবা আবদুল আলিম বাঘারপাড়ার সদুল্যাপুর হাফেজিয়া মাদরাসায় ভর্তি করে দেন। কিন্তু হাফেজি শিক্ষায় তার কোনো আগ্রহ নেই। তাই সে বারবার মাদরাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ কারণে তার বাবা আবদুল আলিম পায়ের সঙ্গে শেকল বেঁধে ভারি কাঠ ঝুলিয়ে মাদরাসায় রেখে আসে। কিন্তু এতেও শিশুটিকে মাদরাসায় আটকে রাখা যায়নি।

মাদরাসার অন্যান্যদের ফাঁকি দিয়ে রোববার বিকেলে সে পালিয়ে যায়। ভারি কাঠের বোঝাসহ শেকলবাঁধা অবস্থায় কয়েক মাইল হেঁটে তারপর একটি বাসে উঠে সে মাগুরা শহরে এসে পৌঁছায়। রাত ১২টার দিকে মাগুরা শহরের ভায়নার মোড় বাসস্ট্যান্প এলাকায় শিশুটিকে শেকল বাঁধা অবস্থায় ঘোরাফেরা করতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে তাকে উদ্ধার করা হয়।

সদর থানার এসআই মিলন জানান, অনেকদিন ধরেই শিশুটির পায়ে শেকল বাঁধা রয়েছে। তাকে উদ্ধারের পর শেকলমুক্ত করা হলে শিশুটি খুবই খুশি হয়। সে বর্তমানে সদর থানায় আছে।

দীর্ঘ ৫ বছর ধরে নির্যাতনের শিকার শিশু আবুজার জানায়, হাফেজি পড়তে তার ভালো লাগে না। তারপরও তার বাবা জোর করে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখে দিয়েছেন মাদরাসায়। সেখান থেকে পালানোর পর মাকে দেখতে যেতে ইচ্ছে হয়েছিল। কিন্তু বাড়িতে ফিরে গেলে বাবা মারধর করে আবারো মাদরাসায় শেকল বেঁধে রেখে আসবেন। এ কারণে সে লুকিয়ে ফরিদপুরে খালার বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।

এ বিষয়ে সদুল্যাপুর হাফেজি মাদরাসার সুপারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

তবে শিশু আবুজারের বাবা আবদুল আলিম জানান, তার দুই ছেলে। বড় ছেলেটি এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু ছোটটিকে হাফেজ বানাবার জন্য মাদরাসায় দিয়েছেন। কিন্তু সে পড়তে চায় না বলেই অপরাধ জানার পরও বাধ্য হয়েই ছেলের পায়ে শেকল বেঁধেছেন।

মাগুরা সদর থানার ওসি আজমল হুদা বলেন, শিক্ষার নামে শিশুটির উপর দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার করা হচ্ছিল। এটি অমানবিক এবং শিশু অপরাধ। শিশুটির বাড়ি এবং মাদরাসাটি যশোর জেলার বাঘারপাড়ায়। তাই সংশ্লিষ্ট থানায় এবং তার পরিবারকে খবর পাঠানো হয়েছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031