মওদুদ আহমদ বর্তমান সরকারের ‘ব্যর্থতা’ ও ‘অপশাসনে ‘ কারণে স্বল্প আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের স্বীকৃতিপত্র পেতে বিলম্ব হয়েছে বলে দাবি করেছেন ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেছেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে আরও ৭ থেকে ৮ বছর আগে এই স্বীকৃতি মিলত।’
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া নাগরিক ফোরাম (জিনাফ) আয়োজিত এক সমাবেশে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আইনমন্ত্রী মওদুদ।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
গত ১৫ মার্চ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতিপত্র হস্তান্তর করে জাতিসংঘ। তবে এই প্রক্রিয়া শেষ করে উত্তরণ ঘটতে সময় লাগবে ২০২৪ সাল অবধি।
জাতিসংঘের এই চিঠি পাওয়ার পর ২২ মার্চ থেকে সপ্তাহব্যাপী উৎসবের শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। সরকার একে উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের চেষ্টার সাফল্য হিসেবেই দেখছে।
তবে জাতিসংঘের এই স্বীকৃতিপত্র প্রাপ্তিতে সরকারের কোনো অবদান নেই-এমন দাবি করে মওদুদ বলেন, ‘এই সরকারের লুটপাট, দুর্নীতি আর কুশাসনের ফলে আজকে এই স্বীকুতি পেতে বিলম্বিত হয়েছে।’
জাতিসংঘের স্বীকৃতিপত্রকে অর্থহীনও আখ্যা দিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আজ দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের কথা বলার অধিকার নেই, নির্বাচিত সংসদ নেই। অথচ তকমা লাগানো হয়েছে উন্নয়নশীল দেশের। আসলে উন্নয়নশীল দেশের এ তকমা অর্থহীন।’
‘এমন উন্নয়নে দেশের মানুষ কোনভাবে সম্পৃক্ত হতে চায় না। কারণ গণতন্ত্র ছাড়া কখনও সত্যিকারের উন্নয়ন সম্ভব নয়।’
‘বিএনপি ২২৫, আ.লীগ ৭৫ আসন পাবে’
আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ৭৫ শতাংশ অর্থাৎ ২২৫ আসন এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৭৫টি আসন পাবে বলে মনে করেন মওদুদ আহমদ।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপিপন্থী প্যানেলের জয়ের পর জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এই ভবিষ্যতবাণী করলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সমস্য।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি পূরণ না হওয়ায় ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি গত কয়েক বছর ধরেই দাবি করছে সরকারের জনপ্রিয়তা শূন্যের কোটায়। ভোট হলে সরকারি দল হারবে বলেই নির্বাচনে কারচুপির জন্য দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও দাবি বিএনপি নেতাদের।
সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি নেতারা নানা আলোচনায় দাবি করে আসছেন ‘সুষ্ঠু’ ভোট হলে তারাই জিতবেন।
মওদুদ বলেন, ‘সুপ্রিমকার্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দেশের জনমতের প্রতিফলন ঘটেছে।’
সর্বোচ্চ আদালত আইনজীবী সমিতির ২০১৮-১৯ মেয়াদের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য (নীল) প্যানেল। ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১০টি পদে জয়লাভ করেছ। অন্যদিকে একটি সহসম্পাদকসহ চারটি পদে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ (সাদা)।
এই প্যানেলে গত ছয় বছর ধরেই জিতে আসছেন বিএনপি-জামায়াতপন্থীরা। কেবল গতবারই আওয়ামী লীগপন্থীরা ছয়টি পদে জয়ী হয়েছিলেন।
মওদুদ বলেন, ‘এ বছর বারের নির্বাচন আমাদের জন্য সাংঘাতিক তাৎপর্যপূর্ণ। সরকারের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নাম বলবে, না সরকারের অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ চেষ্টা করেছেন এই নির্বাচনের হাওয়া উল্টাতে এবং জয়লাভ করতে। কিন্তু তারপরও তারা পারেননি।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মাদ আনোয়ারের সভাপতিত্বে এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈশার সঞ্চালনায় প্রতিবাদী সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবি এম মোশাররফ হোসেন,নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ,দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
