বাংলাদেশ সকল ধর্মের দেশ যে কোনো সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী হামলার মোকাবেলা করার জন্য আমরা তৈরি হয়েছি উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন। কোনো ধর্মেই মানুষ হত্যার স্থান নেই। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে তো মানুষ হত্যার স্থান একদমই নেই।
আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ঢাকায় হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জ্ঞাপন উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে হলি আর্টিজানে নিহত ফারাজ আহমেদ, অবিন্তা কবির, তারিশি জৈন, ইশরাত জাহান আকন্দের পরিবারকে সমবেদনা স্মারক প্রদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রমে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের সকল সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন। আমাদের পুলিশ ও র্যাব বাহিনী হলি আর্টিজান হামলার পর একে একে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। অভিযানে ভেঙে গেছে তাদের নেটওয়ার্ক। জঙ্গিরা কার্যত পঙ্গু হয়ে গেছে। বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন বাংলাদেশের মানুষ এক সুরে এক কথা বলছে, তা হলো বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই।
মন্ত্রী বলেন, হলি আর্টিজান হামলার পর আমরা খুব দ্রুতই রিকভার করেছি। প্রধানমন্ত্রীর সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতিতে যে যার জায়গা থেকে সহযোগিতা করেছে। সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা গেছে। ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দেওয়া ডাকে দেশবাসী সাড়া দিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ থেমে নেই। জঙ্গি-সন্ত্রাসীবিরোধী লড়াই আমাদের অব্যাহত রয়েছে। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও অনেক বেশি সক্ষমতা অর্জন করেছে। পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে নিহত জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের পরিবার তাদের লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আমরা লাশ রেখে দিয়েছিলাম। দেখতে চেয়েছিলাম কারা লাশ নিতে আসে। কিন্তু কেউ আসেনি। বিপথগামীদের পরিবারের সদস্যরা বরং জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এ সময় মন্ত্রী হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত দেশি-বিদেশিদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। বলেন, নিষ্পাপ মানুষদের হারিয়েছি। তাদেরকে তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না। কিন্তু তাদেরকে আমরা স্মরণ করতে পারি; পরিবার-পরিজনদের সমবেদনা জ্ঞাপন করতে পারি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও সুরক্ষা বিভাগের দুই অতিরিক্ত সচিব, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মো. জাভেদ পাটোয়ারী, অতিরিক্ত আইজিপি মোখসেছুর রহমান, র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, জাতিসংঘের বিশেষ দূত ও জাপানি রাষ্ট্রদূসহ নিহতদের স্বজন-পরিজনরা।
