বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন ‘সম্পাদক পরিষদ’প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ছয়টি ধারাকে ‘বাক স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি’ হিসেবে বর্ণনা করে সেগুলো সংশোধনের দাবি জানিয়েছে। সচিবালয়ে আজ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে এক বৈঠকে ১২টি জাতীয়    দৈনিকের সম্পাদকরা তাদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন। সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের নেতৃত্বে নিউজ টুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, নিউ এজের নূরুল কবির, প্রথম আলোর মতিউর রহমান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নঈম নিজাম, ইনকিলাবের এ এফ এম বাহাউদ্দিন এবং ফাইনানশিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক এ এইচ এম মোয়াজ্জেম হোসেন সভায় অংশ নেন। এছাড়া যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, সংবাদের খন্দকার মনিরুজ্জামান, বণিক বার্তার দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, কালের কণ্ঠের ইমদাদুল হক মিলন এবং নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন । লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হকও এই বৈঠকে অংশ নেন।দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে মাহফুজ আনাম সাংবাদিকদের বলেন, “সম্পাদক পরিষদের অনুরোধে এই সভা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে বলতে চাই, উনাদের (তিন মন্ত্রী) যে স্পিরিট আমরা দেখলাম, উনাদের যে সহযোগিতার স্পিরিট এবং আমাদের কনসার্নগুলো উনারা যেভাবে গ্রহণ করলেন এবং যে প্রস্তাব উনারা দিয়েছেনৃ স্থায়ী কমিটিতে যে আলোচনা হবে সেখানে উনারাই প্রস্তাব করবেন সম্পাদক পরিষদকে যেন ডাকা হয় এবং সেখানে যেসব কনসার্ন আছে আমরা তা তুলে ধরব।

প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১, ২৫, ২৮, ৩১, ৩২ ও ৪৩ ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদের উদ্বোগের কথা জানিয়ে মাহফুজ আনাম বলেন, “আমরা মনে করছি, এগুলো বাক স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতার পরিপন্থি। এবং এটা আমাদের যে স্বাধীন সাংবাদিকতা, যেটা নিয়ে বাংলাদেশে আমরা খুবই গর্ববোধ করি, সেটা খুব গভীরভাবে ব্যাহত হবে এবং এ কথাগুলো উনাদের বলেছি, উনারা খুবই সানন্দে গ্রহণ করেছেন। মাহফুজ আনাম আশা প্রকাশ করেন, যে আইনটি হবে, তা সত্যিকার অর্থেই সাইবার ক্রাইম ঠেকাতে ব্যবহার করা হবে, তাতে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা খর্ব হবে না। প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ছয়টি ধারা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও সম্পাদক পরিষদ এ আইন প্রণয়নের পক্ষে বলে জানান সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক। সম্পাদকদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, তারা যে আপত্তিগুলো তুলে ধরেছেন, সেগুলো ‘অনেকাংশে যৌক্তিক’ মনে করায় আগামী ২২ এপ্রিল সংসদীয় কমিটির সভায় এডিটরস কাউন্সিলকে রাখার প্রস্তাব করা হবে। ওই সভার পর সম্পাদক পরিষদ তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো লিখিতভাবে স্থায়ী কমিটিকে দেবে। সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করা হচ্ছে জানিয়ে আনিসুল বলেন, “এটা ফ্রিডম অব প্রেস বা ফ্রিডম অব স্পিচ বন্ধ করার জন্য না। সেইক্ষেত্রে এই আইনের মধ্যে যদি কোনো ত্রুটি থেকে থাকে, তাহলে পরে সেগুলো যেন অপসারণ করা যায়, সেইভাবে যেন আইনটা সংধোশন করা হয় সেই আলোকে এডিটরস কাউন্সিলের সাথে স্থায়ী কমিটির সেই আলোচনা হবে এবং এই আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা দুপক্ষই আশাবাদ ব্যক্ত করতে পারি, তাদের যে কনসর্ন, আমরা দূর করতে পারব।”
Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031