দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচরণ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের এক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত এবং একজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এই দুই কর্মকর্তা দুটি মামলায় তদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে গড়িমসি করছিলেন। দুদকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত দল মনে করছে, এই কর্মকর্তারা আসামিপক্ষের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এই কাজ করেছেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান দুদকের কর্মীদের বিরুদ্ধেও নানা সময় নানা অভিযোগ উঠেছে। দুদকের শীর্ষ পর্যায় থেকে এ নিয়ে নানা সময় নানা হুঁশিয়ারিও এসেছে। বর্তমান মহাপরিচালক ইকবাল মাহমুদ সাম্প্রতিক একাধিক অনুষ্ঠানে নিজ সংস্থার কর্মীদেরকে আরও নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপপরিচালক) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম শামীম ইকবালকে ২০ মে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এবং একই অপরাধে সহকারী পরিচালক বীর কান্ত রায়কে ২১ মে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
‘এ আদেশের ফলে শামীম ইকবাল চাকরি থেকে অবসরের কোনো সুবিধা পাবেন না।’
দুদক কর্মকর্তারা জানান, এস এম শামীম ইকবাল খুলনার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় একটি দুর্নীতির মামলায় এক বছরের বেশি সময় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল না করে নিজের কাছে রেখে দেন। এতে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
এ বিষয়ে দুদকের বিভাগীয় তদন্তে তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০ মে তাকে দুদকের চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়।
ব্যবস্থা নেয়া অপর কর্মকর্তা বীর কান্ত রায়ও একটি মামলার তদন্তে কালক্ষেপণ করেছেন। তিনি দুদকের দিনাজপুরে কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ছিলেন। একটি ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির মামলায় তিনি ৩৮৪ দিনেও তদন্ত প্রতিবেদন দেননি।
দুদক কর্তৃপক্ষের বিভাগীয় তদন্তে দেখা যায়, বীর কান্ত রায় কোনো না কোনোভাবে আসামি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তদন্ত কার্যক্রমে বিলম্ব করেছেন। এ অপরাধে আজ চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী বলেন, ‘দুদক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারে জড়িয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করতে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুদকে প্রাতিষ্ঠানিক অনুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
