সদ্য বিদায় নেয়া বৈশাখের অস্বাভাবিক চরিত্র ছিল এমনই। কখনো কড়া রৌদ, কখনো বৃষ্টি, সাথে ঝড়ো হাওয়া আর বজ্রপাত। চলতি জ্যৈষ্ঠ মাসে গতকাল চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর প্রভাবে আবারও অস্বাভাবিকতায় নগরজীবন। প্রচণ্ড গরমে কাহিল অবস্থা তাদের। এসময় তপ্ত হয়ে উঠে রাস্তা–ঘাট, দালান–কাঠামোও। হাঁফ ছাড়তে মানুষ আশ্রয় খুঁজে ছায়ায়।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়া কর্মকর্তা মেঘনাথ তঞ্চংগা আজাদীকে বলেন, গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। একই দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া কর্মকর্তা আরো বলেন, এ মৌসুমে সাধারণত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকে। গতকাল চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা এ মৌসুমে প্রথম সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। তবে বৃষ্টি নামলে কড়া তাপমাত্রা কমে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল একই সময়ে সন্দীপে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সীতাকুণ্ডে ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাঙামাটিতে ৩৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। পূর্ব–মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরণের আবহাওয়া বর্ষার আগ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তবে আবহাওয়ার বৈচিত্রের কিছুটা পরিবর্তনের কারণে ছয় ঋতুর দেশের এ ধারাও বদলে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন আবহাওয়াবিদরা।
এদিকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রীতিমতো হাঁসফাঁস অবস্থা নগরজীবন। সাধারণ মজুর শ্রেণি থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণির মানুষেরা সর্বত্রই কাহিল অবস্থা। এমনকি কড়া তাপমাত্রায় ঘরের ভেতরও হাঁসফাঁস অবস্থা। এর মধ্যে কাপাসগোলা, চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে গরমে দুর্ভোগ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
অস্বস্তিকর গরমে মাথা ব্যাথাসহ অন্যান্য শারীরিক দুর্বলতায় কষ্ট পেতে দেখা যায় রোজদারদের। বিশেষ করে দুপুরের পর কড়া রৌদ ও তাপমাত্রায় তাদের প্রাণ যেন যায় যায় অবস্থা। অনেক পথচারীকে বাসায় ফোন করে ইফতারি আয়োজনের মধ্যে সরবত রাখার কথা বলতে শোনা গেছে। গরমের প্রভাব পড়েছে ইফতার বাজারেও। গরমে স্বস্তি ফেরাতে মিষ্টি দই, ফিরনি, দই–চিঁড়াসহ বিভিন্ন ফলে জুসের বিক্রয় বেড়ে যেতে দেখা যায়।
গরমের প্রভাব পড়েছে ঈদবাজারেও। চকবাজার, জিইসি মোড়সহ বিভিন্ন বিপণীকেন্দ্রগুলো দিনের বেলায় ছিল ফাঁকা। অনেককেই গরম থেকে স্বস্তি পেতে রাস্তার পাশে অবস্থিত বিভিন্ন শপিং মল, রেস্তোরা, ক্লিনিকসহ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।