file-26শিশুকে গলায় শিকল বেঁধে আটকে রেখে শাস্তি দিলেন তার বাবা শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসারে মো. নয়ন মাঝি (৮) ।

গত ২৪ এপ্রিল রোববার শিশুটিকে রোদের মধ্যে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। নয়ন অসুস্থ হয়ে পড়লে ঐ দিনই সন্ধ্যায় তার শিকল খুলে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে বুধবার পালং থানার পুলিশ নয়নদের বাড়িতে গিয়ে এ ধরনের কাজ না করতে তার পরিবারকে নিষেধ করে দিয়েছে।

নয়নের বাবা মো. মজিবর রহমান মাঝি বলেন, ‘বছরের শুরুতে চার হাজার টাকা খরচ করে ছেলেটাকে রাজনগর তালতলা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করি। কিন্তু সে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে এলাকায় এটা সেটা চুরি করে বেড়ায়। ওর জন্য কেউ কোনো গাছের ফল রাখতে পারে না। ডোমসার বাজারের এক মুদি দোকান থেকে তিন বোতল কোমল পানীয় চুরি করে খেয়েছে নয়ন। শুনে আমার খুব খারাপ লেগেছে। তাই শাস্তি দেওয়ার জন্য রোদে গলায় শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলাম।’

শিশু নির্যাতন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ জানেন কি না প্রশ্ন করা হলে নয়নের বাবা বলেন, ‘আমি কৃষিকাজ করে খাই। আমার এত কিছু জানা নেই। আমার ছেলেকে কেউ চোর বললে আমার তখন খুব খারাপ লাগে।’

কোন দোকান থেকে নয়ন চুরি করেছিল জানতে চাইলে তা বলতে রাজি হননি মজিবর রহমান মাঝি।

যোগাযোগ করা হলে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আসলে ঘটনাটি পারিবারিকভাবে ঘটেছে। নয়নের বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে কিছু সময় বেঁধে রেখেছিল। নয়নের পরিবারকে শিশু নির্যাতন আইন সম্পর্কে বোঝানো হয়েছে, যাতে তারা আর এ ধরনের কাজ না করে।’

নয়নের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের চর কোয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মজিবর রহমান মাঝির ছেলে মো. নয়ন মাঝি (৮)। নয়ন জেলার নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের তালতলা আলিয়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। গত রোববার নয়ন মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে আসে। পরে ডোমসার বাজারের একটি দোকান থেকে তিন বোতল কোমল পানীয় ও কয়েকটি চকলেট চুরি করে খায়। দোকানি নয়নকে কিছু না বলে তার বাবা মো. মজিবর রহমান মাঝির কাছে বিচার দেন। নয়নের বাবা রেগে গিয়ে ঐদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার গলায় ও কোমরে শিকল দিয়ে বাথরুমের সেপটিক ট্যাংকের পাশে একটি বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। বিকেলে নয়ন অসুস্থ হয়ে পড়লে পরে শিকল খুলে স্থানীয় চিকিৎসককে দিয়ে চিকিৎসা করান বাবা।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031