জার্মানিতে তারকা ফুটবলার মেসুত ওজিলের মন্তব্যে ব্যাপক তোলপাড় হচ্ছে । বর্ণবাদ আর অসম্মানের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তার এ বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে জার্মান ফুটবল এসোসিয়েশন (ডিএফবি)। মেসুদ ওজিল ক্লাব পর্যায়ে আর্সেনালের হয়ে গেলেন। তার অভিযোগ জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান (এমফেটিক্যালি রিজেক্টেড) করেছে জার্মানির ফুটবল এসোসিয়েশন। তবে তারা এটা মেনে নিয়েছে, ওজিলকে অবমাননার শিকার থেকে রক্ষা করতে তারা আরো অনেক কিছুই করতে পারতো।  ২৯ বছর বয়সী ওজিল সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি আর জার্মানির হয়ে খেলতে চান না।

কারণ, জার্মান ফুটবল  থেকেই তাকে বর্ণবাদ ও অসম্মানের শিকার হতে হয়েছে। বিশ্বকাপ ফুটবলে জার্মানির হতাশাজনক পারফরমেন্সের জন্য তাকে দায়ী করে ইমেইলে ঘৃণা জানানো হয়েছে। হুমকি দেয়া হয়েছে। ওজিলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে ডিএফবি বলেছে, জাতীয় দল থেকে মেসুত ওজিলের চলে যাওয়ায় তারা অনুতপ্ত। তাদের বিবৃতির ভাষাটি এ রকম- বর্ণবাদের সঙ্গ ডিএফবি জড়িত এমন অভিযোগ আমরা জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। বহু বছর ধরে জার্মানিকে সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য গড়ে তোলার সঙ্গে জড়িত ডিএফবি।

মে মাসে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানের সঙ্গে সাক্ষাত হয় মেসুত ওজিলের। ওই অনুষ্ঠানে এরদোগানের সঙ্গে ক্যামেরাবন্দি হন ওজিল। সেই ছবি নিয়ে জার্মান মিডিয়া ও ডিএফবিতে ব্যাপক সমালোচিত তিনি। নানা রকম কথা শুনতে হয়েছে ওজিলকে। গ্রুপ পর্যায়ে জার্মানি এবার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলে তিনি আরো বেশি সমালোচনার মুখে পড়েন। তবে ডিএফবি স্বীকার করে নিয়েছে। তারা বলেছে, তারা বিষয়টি হ্যান্ডেল করে নি। এটা দুঃখজনক যে, মেসুত ওজিল বর্ণবাদী স্লোগানের শিকার হয়েছেন এক্ষেত্রে তাকে পর্যপ্ত নিরাপত্তা দেয়া হয় নি। তিনি তেমনটাই মনে করেছেন। উল্লেখ্য, মেসুত ওজিল তুরস্কের বংশোদ্ভুত একজন তৃতীয় প্রজন্মের জার্মান। তিনি জন্মেছেন জেলসেনকিরচেনে। ২০১৪ সালে জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ের গুরুত্বপূর্ণ কারিগরের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।
এক মাস আগে জার্মানিতে খবরের শিরোনাম ছিল ‘ওজিল মিট এরদোগান’। তার সঙ্গে ছিলেন জার্মান আন্তর্জাতিক ফুটবলের ইলকাটই গুনডোগান। তিনি ম্যানচেস্টার সিটির খেলোয়াড়। তিনিও তুরস্কের বংশোদ্ভূত। ওই সাক্ষাত নিয়ে ওজিল বলেছেন, তিনি এবং গুনডোগান ফুটবল নিয়ে আলোচনা করেছেন এরদোগানের সঙ্গে। ওই ছবিটি তুরস্কে ক্ষমতাসীন একে পার্টি প্রকাশ করে। এর ফলে নির্বাচনে সুবিধা পায় ওই দল। এমনটাই ভাবা হয়। আসলেই নির্বাচনে বিজয়ী হন এরদোগান। ওই ছবি প্রকাশ হওয়ার পর জার্মান গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিষয়ে ওজিল ও গুনডোগানের আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জার্মানির অনেক রাজনীতিক। এর আগে তুরস্কে যখন ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে তারপরে রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন চালান এরদোগান। ওই সময়ে তার ব্যাপক সমালোচনা করে জার্মানি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031