taslima_111430কথিত মুক্তমনাদের লেখালেখির সমালোচনা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ক্ষেপেছেন বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। আজ সোমবার তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, “জয়কেও যদি এখন কুপিয়ে মেরে ফেলা হয়, হাসিনা বলবেন, ‘জয়ও ভেতরে ভেতরে হয়ত নাস্তিক ছিল। আমরা জানতাম না। নাস্তিক না হলে বা মুক্তমনা না হলে সন্ত্রাসীরা ওকে মারবে কেন?’’

পাঠকদের জন্য তসলিমার ফেসবুক স্ট্যাটাস হুবুহু তুলে ধরা হলো:

‘‘পুরো বিশ্ব জানে বাংলাদেশে নাস্তিকদের কুপিয়ে মারছে ইসলামী সন্ত্রাসীরা। এখন কোনো আস্তিককে মেরে ফেলা হলেও বলা হবে, ও ব্যাটা নির্ঘাত নাস্তিক ছিল। হাসিনার ছেলে জয়কেও যদি এখন কুপিয়ে মেরে ফেলা হয়, হাসিনা বলবেন, ‘জয়ও ভেতরে ভেতরে হয়তো নাস্তিক ছিল। আমরা জানতাম না। নাস্তিক না হলে বা মুক্তমনা না হলে সন্ত্রাসীরা ওকে মারবে কেন।’’

‘সন্ত্রাসীদের বিচারের প্রতি আস্থা দেশের প্রধানমন্ত্রীরও আছে। আস্থা আছে বলেই প্রধানমন্ত্রী খুনীদের শাস্তি দেওয়ার পক্ষে নন। তিনি বরং মুক্তমনাদের উপদেশ দিচ্ছেন মনকে মুক্ত না করে বদ্ধ করতে। জটিল লেখালেখি বন্ধ করতে।’

‘‘হত্যাকারীদের, আক্রমণকারীদের, ঘৃণাকারীদের বিচারের ওপর মানুষের আস্থা অসম্ভব বেশি। তাদের বিচার আর আদালতের বিচারের মধ্যে মানুষ পার্থক্য দেখে না। ‘ওকে যখন খুন করা হয়েছে, খুনের পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে। কারণ না থাকলে ওরা খুন করবে কেন!’ এ কথা প্রধানমন্ত্রীও যেমন বলেন, আমজনতাও বলেন। ইসলামী সন্ত্রাসীরা নাস্তিক খুন শুরু করার পর থেকে নাস্তিকদের যত-না অপরাধী ভাবতো মানুষ, তার চেয়ে বেশি অপরাধী ভাবছে। নাস্তিকরা খুন হওয়ার মতো অপরাধ করে বলেই ধারণা জন্মেছে।’’

‘‘সন্ত্রাসী আর খুনিদের প্রতি মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাস দিন দিন বাড়ছে , আর ভিকটিমদের প্রতি মানুষের ঘৃণা এবং অবিশ্বাসও দিন দিন বাড়ছে। সন্ত্রাসী আর খুনির প্রতি যে বিশ্বাস মানুষের, তা অনেকটা ঈশ্বরে বিশ্বাসের মতো। ঈশ্বর যেমন কোনো ভুল করতে পারেন না, মানুষ মনে করে খুনিরাও কোনো ভুল করতে পারে না। ঈশ্বর যেমন কোন মানুষ কী করছে, কার মনে কী— সব জানেন, খুনিরাও জানে সব, খুনিরা জানে কে ভেতরে ভেতরে আস্তিক, কে নাস্তিক। ঈশ্বর যেমন শাস্তি দেন মানুষকে, কর্মফল দেন, খুনি সন্ত্রাসীরাও তাই করে। সন্ত্রাসীদের মানুষ ভয় পায়, ঈশ্বরকে যেমন ভয় পায়।’

Share Now
May 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031