বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জাতীয় ঐক্য ছাড়া এই সরকারকে সরানো সম্ভব নয় শিগগিরই জাতীয় ঐক্যর রূপরেখা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে এমনটা জানিয়ে।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত দোয়া ও প্রতিবাদী নাগরিক সভায় এ কথা বলেন তিনি। কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুস্থতা কামনা এবং গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপাসন তারেক রহমানের যাবজ্জীবন সাজা বাতিলের দাবিতে এই সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নাগরিক দল।

মোশাররফ বলেন, জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। অতি শিগগিরই জাতীয় ঐক্যর রূপরেখা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে। যার মাধ্যমে দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে লাখ লাখ মামলা দেয়া হচ্ছে। বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে এবং খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করতে এসব মামলা দেয়া হচ্ছে। সরকারের অলিখিত বাকশালকে প্রতিষ্ঠা করতেই বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ভুতুড়ে মামলা দেয়া হচ্ছে।

বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের কাছে কেউ ন্যায় বিচার আশা করে না মন্তব্য করে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, যে দেশে প্রধান বিচারপতি নিজে বিচার পাননি সে দেশে অন্যান্য নাগরিকরা সুবিচার পাবে এটা আশা করা অত্যন্ত কষ্টকর। সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা তার বইয়ে লিখেছেন যে দেশে আমি প্রধান বিচারপতি হয়ে বিচার পাইনি সে দেশে সাধারণ মানুষ বিচার পাবে সেটা আমি আশা করি না। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিষয়েও তাই হয়েছে।

২১ আগস্ট মামলার রায়ের পরে বিএনপির আর নিবন্ধন থাকতে পারে না বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের যে মন্তব্য দিয়েছেন তার সমালোচনা করেন মোশাররফ। বলেন, ‘আমরা কোনো হত্যাকাণ্ডকেই সমর্থন করি না। তবে অতীতে রমনার বটমূলে আ.লীগ সরকারের আমলে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেনি? পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেনি? এসব ঘটনার জন্য তাহলে অনেক আগেই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল হওয়া উচিত ছিলো।’

ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনি বেশি কথা বলেন। গ্রামের চায়ের দোকানেও আপনার বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।’

খালেদা জিয়াকে ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, জনগণের মধ্যে আওয়াজ উঠেছে এই স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অংশ গ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

‘দেশের মানুষ নীতিগতভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে যে বেগম জিয়াকে ছাড়া অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। এবং জাতীয় ঐক্য ছাড়া জনগণকে এই স্বৈরাচারী সরকারের হাত থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না।’

সভায় সাবেক চিফ হুইপ ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদিন ফারুক বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেয়া পরিকল্পিত মামলার রায় প্রত্যাহার করতে হবে। বেগম জিয়ার মুক্তি দিতে হবে, সকল ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, ইভিএম বাতিল করতে হবে।

প্রতিহিংসা রাজনীতি বিএনপি কখনো করেনি, করবেও না এমন দাবি করে ফারুক বলেন, এখনো নির্বাচনের তফসিলই ঘোষণা হয়নি, অথচ তাতেই বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা পর্যন্ত বাড়িতে ঘুমাতে পারে না। যদি আমাদের নেতাকর্মী ও ভোটারদের একটি বার ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ হয় তাহলে আওয়ামী লীগ একটা সিট ও পাবে না।

ফারুক বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচন কমিশনের সংস্কার ছাড়া যদি কোন নির্বাচন হয়, তাহলে সে নির্বাচন হবে ২০০৮ সালের মঈনের নির্বাচনের মত। আমরা ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি বৃহত্তর ঐক্য প্রচেষ্টার ভয়ে কাদের সাহেবের পা থরথর করে কাঁপছে বলে তিনি মিডিয়ার সামনেই পাগলের প্রলাপ বকছেন।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুল্লাহ প্রমুখ।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031