শতকোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে একটি চক্রের ২২ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলন করেছে র‌্যাব। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের ২২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৪।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে শেয়ার হোল্ডার বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো এই চক্রটি। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও ধণাঢ্য ব্যবসায়ীদের টার্গেট করতেন তারা। তারা দীর্ঘ ১৫ বছরে প্রায় একশ কোটি টাকা হাতিয়েছে।

প্রতারক চক্রের ২২ সদস্য হলেন, ইমরান হাসান, হুমায়ুন কবির হালিম, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল বারী ওরফে আব্দুল আউয়াল, শাহাদাত হোসেন, মিনহাজ, কামরুজ্জামান, হাবিবুর রহমান, সঞ্জিত সাহা, মেহেদি হাসান হাবিব, ইউসুফ, মামুনুর রশীদ চৌধুরী, মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান ওরফে আব্দুল জলিল, মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান, রফিকুল ইসলাম এবং মোহাম্মদ মিজান।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান এসব তথ্য জানান। 

মুফতি মাহমুদ খান জানান, ‘সু-সজ্জিত অফিস ও দামি গাড়ি ভাড়া নিয়ে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির নামে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অফিস খুলেছিলেন তারা। টার্গেট করা লোকদের কৌশলে অফিসে এনে ভুয়া চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে বিশ্বাস অর্জন করাতো।

পরে চুক্তির মাধ্যমে তাদেরকে কোম্পানির উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হত। সুযোগ বুঝে কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার করারও প্রস্তাব দিতেন চক্রের সদস্যরা। প্রস্তাবে ভিকটিমরা রাজি হলে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়া হত। সেই নগদ অর্থ হাতে পাওয়ার পরই অফিসসহ তারা উধাও হয়ে যেতেন।’

এসব অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযানে নামে র‌্যাব। শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে শনিবার সকাল ৭ টা পর্যন্ত র‌্যাব-৪ এর একটি দল রাজধানীর মিরপুর, দারুস সালাম, উত্তরা ও রামপুরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভুয়া নথিপত্র ও সরঞ্জামাদি জব্দসহ এই চক্রের ২২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।

মুফতি মাহমুদ খান জানান, ‘প্রতারক চক্রটি অন্য সব প্রতারক চক্রের মতো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন না। তারা প্রতারণাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে একটি সাংগঠনিক কাঠামোর মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

প্রতিটি গ্রুপে ৫ টি স্তরে তাদের সদস্যরা কাজ করতেন।

স্তরগুলো হলো- সাব ব্রোকার, ব্রোকার, ম্যানেজার, চেয়ারম্যান ও সর্বশেষ কোম্পানির প্রধান বস।’

তিনি বলেন, পাঁচটি কৌশলে তারা প্রতারণা করতেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

মুফতি মাহমুদ বলেন, ‘আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের জমি বা নির্মাণাধীন ভবনের উপর ইন্টারনেট টাওয়ার স্থাপনের প্রলোভন, এনজিও সেজে বিনা খরচে সোলার প্যানেল স্থাপনের চুক্তি, ইট পাথর রড সিমেন্ট গার্মেন্টস ঠিকাদারি দেয়া এবং অফিসে নিয়ে এসে তাস খেলার ফাঁদে ফেলে ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল এই চক্রটি।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031