নবাব সিরাজদ্দৌলা রোডের চন্দনপুরা মসজিদের সামনে নির্মাণাধীন বক্স কালভার্টের কাজ ধীরগতিতে চলছে । এতে নির্দিষ্ট সময়ে কালভার্টটির কাজ শেষ হওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। এছাড়া নির্মাণকাজের জন্য সড়কের একপাশ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে বাড়ছে জনদুর্ভোগও। অবশ্য নির্মাণ কাজের ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা বলছেন, পুরোনো ব্রিজ ভেঙ্গেই নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন বক্স কালভার্ট। কিন্তু পুরোনো ব্রিজের নিচ দিয়ে ওয়াসা ও গ্যাসের পাইপ লাইন রয়েছে। এসব পাইপ না সরালে নির্মাণ কাজ করা যাচ্ছে না। পাইপলাইনগুলো সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট সেবাসংস্থাগুলোকে চিঠিও দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি প্রতিষ্ঠানগুলো।
প্রসঙ্গত, ১ কোটি ২৫ লাখ টাকায় বক্স কালভার্টটি নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস আলম। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যাদেশের মেয়াদ রয়েছে। এদিকে গতকাল সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, চন্দনপুরা মসজিদের সামনে পুরোনো ব্রিজের কিছু অংশ ভাঙা অবস্থায় আছে। এর দুই পাশে পুরোনো ও নতুন ইটের স্তুপ এবং লোহা রাখা হয়েছে। নির্মাণ কাজের জন্য সিরাজদৌলা রোডের পশ্চিমাংশের দারুল উলুম মাদ্রাসা মোড় থেকেই যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফলে সিরাজদৌলা রোডের পূর্ব পাশ দিয়েই চলাচল করছে উভয়দিকের (চকবাজার ও আন্দরকিল্লাহমুখী) গাড়ি। এক অংশ দিয়ে দুইদিকের গাড়ি চলাচল করায় সেখানে লেগে থাকে যানজট। এছাড়া যানজট এড়াতে চকবাজারমুখী কিছুৃ গাড়ি দারুল উলুম মাদ্রাসা রোড দিয়ে প্রবেশ করে, যা গুডস হিল মোড়ে এসে সৃষ্টি করছে যানজট। এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ‘বক্স কালভার্ট নির্মাণের জন্য পুরোনো ব্রিজের অংশবিশেষ ভাঙা হয়েছে প্রায় একমাস আগে এবং এতদিন ধরে সেভাবেই পড়ে আছে। এক্ষেত্রে কাজে ধীরগতির অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। দ্রুতগতিতে কাজ শেষ করলে উন্নয়ন কাজের স্বার্থে সাময়িক এ দুর্ভোগ মেনে নিতে আপত্তি নেই বলেও জানান তারা।’
চন্দনপুরা মসজিদ কমিটির সম্পাদক হাজী শেখ গোলাম মোহাম্মদ রাজু বলেন, ‘পুরোনো ব্রিজের কিছু অংশ ভাঙা হয়েছে প্রায় একমাস হবে। খুব ধীরগতিতে চলছে কাজ। ঠিকাদারকে বারবার অনুরোধ করেছি, কাজটা যেন দ্রুতগতিতে করা হয়। কিন্তু কে শুনে কার কথা। এভাবে ধীরগতিতে কাজ হওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। দিনের প্রায় সময় এখানে যানজট লেগে থাকে।’
পথচারি মো. সেলিম বলেন, ‘রাস্তার একপাশ বন্ধ থাকায় অপর পাশ দিয়েই দুইদিকের যানবাহনগুলো চলাচল করছে। এতে মুহূর্তেই সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। দীর্ঘসময় এ যানজটে বসে থাকতে হয় যাত্রীদের। এ ভোগান্তি আর কতদিন চলবে?
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘ব্রিজটির কিছু অংশ ভাঙার পর দেখা গেছে, সেখানে চট্টগ্রাম ওয়াসার পাইপ লাইন এবং গ্যাসের পাইপলাইন রয়েছে। এখন এসব পাইপ লাইন না সরালে কাজ করতে সমস্যা হবে। পাইপলাইনগুলো সরিয়ে নেয়ার জন্য ১০/১২ দিন আগে দুই প্রতিষ্ঠানকেই চিঠি দিয়েছি। তারা আজ সরাবে, কাল সরাবে বলে সময়ক্ষেপণ করছে। মূলত, পাইপলাইনগুলো সরিয়ে না নেয়ায় কাজে বিলম্ব হচ্ছে। পাইপ লাইনগুলো সরিয়ে নিলে এর কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা পুরো ব্রিজটি ভাঙতে পারবো।
নির্মাণাধীন কালভার্টের ঠিকাদার মো. ইকবাল বলেন, আমাদের কাজ কিন্তু বন্ধ নেই। আমরা কাজ করছি। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত নির্মাণ কাজের সময়সীমা আছে। দ্রুতগতিতে কাজ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ করবো। আসলে ওয়াসা, গ্যাস, টিএন্ডটির লাইন থাকায় কাজ করতে হচ্ছে খুব সর্তকতার সাথে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারজানা মুক্তা বলেন, ‘আমরা ভেঙ্গে দেখেছি, আগের যে ব্রিজ ছিল তার বেইস (ভিত্তি) ঠিক আছে কি না। আমরা দেখেছি, বেইসটা খুব উইক (দুর্বল)। দু’পাশে ওয়াল না করে যদি শুধু স্ল্যাব বসানো হয় তাহলে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের এঙিডেন্ট হতে পারে। কারণ, ওখানে আগে কোন রড ছিল না। ব্রিক দিয়ে করা হয়েছিল। সেজন্য এটাকে আমরা ভেঙ্গে পুরো রড দিয়ে আরসিসি করে স্ল্যাব দিয়ে দিব। কাজটা আমরা দ্রুত করার চেষ্টা করছি। আমাদের রড কাটা হয়ে গেছে। ইনশাল্লাহ এ সপ্তাহে ঢালাই করে ফেলতে পারবো।’
চসিকের এ প্রকৌশলী বলেন, ‘এ কালভার্টটা করার জন্য স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল। কারণ, মসজিদের সামনে পানি জমে থাকতো। এখন আমরা সেখানে ক্রস ড্রেন নির্মাণ করবো। কালভার্টটা আরো উঁচু করবো। যাতে পানি চলাচল সহজ হয়। এতে ভবিষ্যতে ওখানে আর পানি জমে থাকবে না।’
জনভোগান্তির বিষয়ে প্রকৌশলী ফারজানা মুক্তা বলেন, ‘একটু ভোগান্তি হচ্ছে, সেটা আমরা বুঝতে পারছি। ঠিকাদারদেরকেও বারবার বলছি, কাজটা দ্রুত শেষ করার জন্য।
| M | T | W | T | F | S | S |
|---|---|---|---|---|---|---|
| 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 |
| 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 |
| 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 |
| 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 |
| 29 | 30 | 31 | ||||
