পুলিশ চলন্ত বাসে কটিয়াদীর মেয়ে নার্স শাহিনূর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণ শেষে হত্যার ঘটনায় স্বর্ণলতা পরিবহনের বাসটির (ঢাকা মেট্রো ব-১৫-৪২৭৪) মালিক আল মামুন (৩৭) কে গ্রেপ্তার করেছে । বুধবার দুপুরে পাকুন্দিয়া উপজেলার মঠখোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সারোয়ার জাহান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু, বাসের হেলপার লালন মিয়া ও কটিয়াদীর কাউন্টার মাস্টার রফিকুল ইসলাম রফিক আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছিল, মালিক আল মামুন তাদের ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বাসটির ব্যাপারে ভুল তথ্য দিতে প্ররোচিত করেছিল। আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই ঘটনায় তার জড়িত থাকার বিষয়টি ওঠে আসায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া স্বর্ণলতা পরিবহনের বাসটির মালিক আল মামুন গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার ঘোড়াদিয়া গ্রামের আসাদুজ্জামান মনিরের ছেলে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সারোয়ার জাহান আরও জানান, গ্রেপ্তারের পর সন্ধ্যায় তাকে আদালতে হাজির করার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরবর্তীতে তার রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও তিনি জানান।

নিহত শাহিনুর আক্তার তানিয়া কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। তিনি ঢাকার ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কল্যাণপুর শাখায় সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মস্থল ঢাকা থেকে বাড়িতে আসার জন্য গত ৬ই মে বিকালে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে (ঢাকা মেট্রো ব-১৫-৪২৭৪) ওঠেছিলেন শাহিনুর আক্তার তানিয়া। বাড়ির নিকটতম এলাকা বাজিতপুর উপজেলার বিলপাড় জামতলীতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হন। গণধর্ষণ শেষে তাকে বাস থেকে ফেলে হত্যা করা হয়।

পরে স্বর্ণলতা পরিবহনের কটিয়াদীর কাউন্টার মাস্টার মো. রফিকুল ইসলাম রফিক ও সুপারভাইজার আল আমিন নার্স তানিয়ার নিথর দেহ কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তানিয়া হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৭ই মে রাতে নিহত শাহিনুর আক্তার তানিয়ার পিতা মো. গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে বাসের চালক নূরুজ্জামান নূরু, হেলপার লালন মিয়া, হাসপাতালে তানিয়ার মরদেহ আনয়নকারী আল আমিন এবং পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার ব্যবসায়ী আবদুুল্লাহ আল মামুন- এই চারজনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকে আসামি করে বাজিতপুর থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু, বাসের হেলপার লালন মিয়া ও কটিয়াদীর কাউন্টার মাস্টার রফিকুল ইসলাম রফিক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের জবানবন্দিতে বাসমালিক আল মামুনের নাম ওঠে আসে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু ও হেলপার লালন মিয়া জানায়, বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু, বাসের হেলপার লালন মিয়া এবং নূরুর খালাতো ভাই ও বাসটির অপর হেলপার বোরহান এই তিনজনে মিলে পালাক্রমে তানিয়াকে ধর্ষণ করে। তাদের মধ্যে প্রথম ধর্ষণকারী ছিলো বোরহান।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031