গত দুই বছরে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ৩২ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে । এদের মধ্যে ১২জন বিজিবি ও ২০জন পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় বলে জানান কক্সবাজার জেলা পুলিশ। নিহতদের অধিকাংশ ইয়াবা কারবারের সাথে সংশ্লিষ্ট।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, ২০১৭ সালে আগস্টে রোহিঙ্গারা আশ্রয় গ্রহণের পর অবস্থা অনেকটা শান্ত ছিল। এখন তেমনটি নেই। আগে তারা ছিল খাদ্য এবং চিকিৎসা নির্ভর। আর বর্তমানে রেশনসহ প্রায় সবকিছু ফ্রি পেয়ে তাদের মাথায় দুষ্টবুদ্ধি কাজ করছে প্রতিনিয়ত। এছাড়াও ক্যাম্পগুলোতে অর্ধেকেরও বেশি যুবক। ফলে অপরাধ প্রবণতা বাড়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে সংখ্যাগত দিক দিয়ে খারাপের দিকেই যাচ্ছে। তবে এখনো পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিশাল এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যত নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন পুলিশের এই কর্তা।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার কিছুদিন পর নিজেদের মধ্যে হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। অধিপত্য বিস্তার, ত্রাণ সামগ্রী বণ্টন নিয়ে বিরোধ, পূর্ব-শত্রুতার জের, ইয়াবা কারবার, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দে অপহরণ, খুন, গুম, ধর্ষণের মতো অনেক গুরুতর অপরাধের ঘটনা ঘটছে।
তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার থেকে মাদকের চালান দেশে অনুপ্রবেশকালে অধিকাংশ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। বিজিবি, পুলিশের সাথে বিভিন্ন সময় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় গত দুই বছরে উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্পে ৩২ জন রোহিঙ্গা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। তৎমধ্যে উখিয়ায় ২৪ জন, টেকনাফে ৮জন জন নিহত হয়।
সর্বশেষ শনিবার দিবাগত রাতে টেকনাফের জাদিমুরা পাহাড়ে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যায় জড়িত দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। নিহতরা হল, জাদিমুরা ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. শাহ ও বালুখালী ক্যাম্পের আবদু শুক্কুর। এসময় দুটি বন্দুক ও ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্যও আহত হয়। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছন টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ প্রদীপ কুমার দাশ। উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। অনেক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা বিপুল এই জনগোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেকটা কঠিন হয়ে ওঠছে। এদিকে দেশী-বিদেশী দাতা সংস্থাগুলোর কারসাজিতে পরপর দুই বার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হওয়ায় স্থানীয় অধিবাসীরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভুগছেন বলে জানান তিনি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031