ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেছেন সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা আরও কঠোর করার কথা জানিয়ে, সড়কে দায়িত্ব পালনকারী প্রত্যেক ট্রাফিকের গায়ে ক্যামেরা লাগানো থাকবে। মামলা দেওয়ার সময় ছবি না তোলা থাকলে সেই ট্রাফিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘কোনো কর্মকর্তা মামলা না দিয়ে অন্য কোনভাবে সুবিধা নিতে চাইলে আর কেউ যদি সেটা নিয়ে অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সার্জেন্টদের ক্যামেরা দেবো। এমন ঘটনার যদি অভিযোগ থাকে আর যদি সার্জেন্টের ক্যামেরা অন না থাকে (বন্ধ থাকে), আমরা ধরবো সে অবৈধ কাজের জন্য বন্ধ রেখেছিল। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বর্তমানে অনেক সার্জেন্ট ও ট্রাফিক পুলিশ হেলমেট পড়ে না। এই আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ স্বচ্ছ থাকবে। আমরা পুলিশের সবাইকে বলে দিয়েছি ট্রাফিকের লোকজন যদি আইন অমান্য করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আইন সম্পর্কে সার্জেন্টদের মাসখানেক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তাদের বই দেওয়া হয়েছে এবং সেই বইয়ের ওপর পরীক্ষা নেওয়া হবে। আর আইনের কোনো ধারায় যদি কাউকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয় তাহলে সে বিষয়ে শুনানির ব্যবস্থা রয়েছে।’

নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আইনটি প্রয়োগের আগে আমরা যারা যানবাহন ব্যবহার করে তাদের সচেতন করছি। বাস টার্মিনাল ও গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেকশনে মাইক দিয়ে আইনের বিষয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি। শ্রমিকদের জড়ো করে আইন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় পত্রপত্রিকায়ও নতুন আইনের ধারা নিয়ে ফিচার দেওয়া হয়েছে।’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আগে ডিএমপিতে পজ মেশিনের মাধ্যমে মামলা দিতাম, তবে সফটওয়্যার আপডেটের কারণে মেশিনে মামলা দেওয়া আপাতত বন্ধ আছে। আমরা আগের নিয়মে কাগজের কেস স্লিপ বই প্রিন্ট করেছি। সেটা দিয়ে আপাতত মামলা দেওয়া হবে।’

মামলার ধারাগুলো নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বলেন, এই মামলায় নতুন কিছু বৈচিত্র্য আছে। এখানে সাজার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরা ধারণা করছি এতে মানুষের মধ্যে ভয়ে হলেও আইন মানার প্রবণতা সৃষ্টি হবে। উন্নত বিশ্বের মতো আইনভঙ্গের জন্য পয়েন্ট কাটার সিস্টেম করা হয়েছে।’

প্রায়ই মামলার কাগজ তোলা নিয়ে অনেককে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ভোগান্তি রোধে পুলিশের কোন উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, ‘আমরা মামলা  দিলে সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ে তার দায়িত্বে কাগজ দেই। অন্য কোথাও কাগজ দেই না। উনার কাছে গেলেই ভোগান্তি ছাড়া গাড়ির কাগজপত্র পাওয়া যাবে।’

জেব্রা ক্রসিং বা ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে পার না হলে পথচারীদের সর্বোচ্চ জরিমানা ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। কিন্তু যেসব এলাকায় ওভারব্রিজ বা জেব্রা ক্রসিং নেই সেক্ষেত্রে কীভাবে মামলা দেয়া হবে জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যেসব জায়গায় জেব্রা ক্রসিং নাই ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা তাদের রাস্তা পারাপারে সাহায্য করবে।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031