৯ বছর পূর্তি আজ বহুল আলোচিত ফেলানী খাতুন হত্যার । দীর্ঘসূত্রিতার মধ্যদিয়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে চলছে তার বিচারিক কার্যক্রম। ২০১১ সালের এই দিনে ভারতীয় বিএসএফ’র গুলিতে নির্মম হত্যার শিকার ফেলানীর লাশ কাঁটাতারে ঝুলে ছিলো দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘণ্টা। এ ঘটনায় প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিলো গণমাধ্যমসহ বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ভারতকে। ফেলানীর পরিবার এখনো বুক বেঁধে আছেন ন্যায় বিচারের আশায়।

জানা যায়, কাজের সন্ধানে মেয়েকে নিয়ে ভারতে পাড়ি জমিয়েছিলো ফেলানী খাতুন ও তার বাবা নুরুল ইসলাম নুরু। সেখানে কয়েক বছর থাকার পর কিশোরী মেয়েকে নিজ দেশে বিয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলেন।

দিনটি ছিলো ২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি। ভোর ৬টার দিকে ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেন বাবা ও মেয়ে। বাবা নুরুল হক কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে পার হতে পারলেও মেয়ে ফেলানী কাঁটাতারে উঠতেই ভারতীয় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ গুলি চালায়। কাঁটাতারেই ঢলে পরে ফেলানীর নিথর দেহ। সেখানে সাড়ে ৪ ঘণ্টা ঝুলে থাকার পর তার লাশ নিয়ে যায় বিএসএফ।

এই ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ৩০ ঘণ্টা পর বিজিবির কাছে লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ। দীর্ঘ ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচার সম্পন্ন হয়নি। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৫শে জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করা হলেও তা বারবার পিছিয়ে দেয়া হয়।

দীর্ঘদিন ধরে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার না হওয়ায় পরিবারসহ হতাশ স্বজনরাও। ২০১৫ সালের ১৩ই জুলাই ভারতীয় মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানী খাতুন হত্যার বিচার ও ক্ষতিপুরণের দাবিতে দেশের সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করে। ২০১৭ সালের ২৫শে অক্টোবর শুনানির পর ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে বারবার তারিখ পিছিয়ে যায়। ফলে থমকে গেছে ফেলানী খাতুন হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপুরণের দাবি।

ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরু ও মা জাহানারা বেগম জানান, ভারতীয় সর্বোচ্চ আদালতে ফেলানী হত্যার বিচারিক কার্যক্রম ঝুলে থাকায় আমরা হতাশ। আমরা ন্যায়বিচারের জন্য দীর্ঘ ৯ বছর ধরে অপেক্ষা করছি।  

এদিকে ফেলানী হত্যার বিচার কার্যক্রম নিয়ে কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন জানান, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে ফেলানী হত্যাকাণ্ডের রিট এ বছর তালিকাভুক্ত না হওয়ায় কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে বিচারিক কাজ। দ্রুত ফেলানী হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় হলে উভয় দেশের সীমান্তের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে বলে মনে করেন তিনি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031