এখন সেই ঘোষণা বাস্তব রূপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল। দেশ ডিজিটাল করা হচ্ছে এবং সরকারি কাগজপত্রগুলোও ডিজিটাল হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
রবিবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে টাঙ্গাইল জেলার পরিবার পরিকল্পনা, মা-শিশু স্বাস্থ্য এবং প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের ভিডিও কনফারেন্সের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তবে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, দেশ ডিজিটাল করা হয়েছে। সরকারি কাগজপত্রগুলোও ডিজিটাল হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টাঙ্গাইল জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কার্যক্রম পেপারলেস করা হলো। ক্রমান্বয়ে অন্যান্য জেলাগুলোও পেপারলেসের আওতায় আনা হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে কার্যক্রম পরিচালনায় বেশ কিছু সমস্যা হয়। ম্যানুয়াল রেজিস্টারে মাঠ পর্যায়ে কর্মীরা অধিক কাজের চাপে ভারাক্রান্ত থাকে। ফলে সঠিক কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন, দৈনন্দিন কাজের তথ্য সংকলন, রিপোর্ট প্রস্তুত প্রভৃতি নানামুখী কাজ সময় সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য। অনেক ক্ষেত্রে কাজের গুণগত মান বজায় রাখা দুরূহ হয়ে পড়ত। সঠিক সময়ে তথ্য পাওয়া যেত না। ফলে কর্মীদের কাজ এবং অগ্রগতি ট্রাক করা কষ্টকর ছিল। তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ কষ্টসাধ্য ছিল। এখন আর এই সমস্যাগুলো থাকবে না।
চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর প্রোগ্রামের আওতায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের এমআইএস ইউনিটের অপারেশন প্ল্যানের আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রযুক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার এবং গুণগত ও মানসম্মত তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে, প্রমাণনির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সহায়ক, একটি নির্ভরযোগ্য তথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। নেয়া কার্যক্রমগুলোর প্রথমে রয়েছে, পরিবার কল্যাণ সহকারী, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা এবং উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের মাধ্যমে প্রদেয় পরিবার পরিকল্পনা, মা-শিশু স্বাস্থ্য ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম মনিটরিং এবং তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের মান উন্নয়নে সারাদেশে চলমান কার্যক্রমের তথ্য উপাত্ত ই-রেকডিং ও রিপোটিং পদ্ধতির আওতায় নিয়ে আসা।
ই-এমআইএস সিস্টেমটি ২০১৫ সাল থেকে টাঙ্গাইল এবং হবিগঞ্জ জেলায় পাইলটিং করা হয়। ইউএসএআইডির আর্থিক সহায়তায় এই কার্যক্রমে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে আইসিডিডিআরবি, মেজার ইভালুয়্যশন, সেভ দ্যা চিল্ড্রেন, মা-মণি এমএনসিএসপি কর্মসূচি। বর্তমানে সারা দেশের ৩২টি জেলার ২০২টি উপজেলায় এ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এরফলে, কাগজবিহীন তথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রবর্তনের মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে আরো একধাপ অগ্রগামী হলো পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর বলে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী আ খ ম মহিউল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকগণ, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।
