বিজেপিসহ কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো ভারতকে মুসলিমশূন্য করার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ধারাবাহিক যে নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে তা মোদি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পতন ডেকে আনবে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা আহমদ শফী বলেছেন। ভারতের উচিত নিজেদের দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা।
গতকাল বিকালে সাতকানিয়া মাদার্শা বাবুনগর মাদ্রাসা ইয়াছিন মক্কী আল কাছেমিয়্যাহ হেফজখানা এতিমখানা ও আল্লামা নুরুল হুদা স্মৃতি সংসদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিশাল ইসলামী মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আলেম সমাজ নবীদের উত্তরসূরি। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে জাতিকে নির্দেশনা দেয়া তাদের কর্তব্য। শাসক ও জনগণকে নসিহত করা তাদের জিম্মাদারী। কল্যাণের প্রতি আহ্বান জানানো ও অকল্যাণের প্রতিরোধ করতে আলেমদের স্বয়ং আল্লাহ ও মহানবী (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। তাই কোনো অবস্থাতেই আলেম সমাজের পক্ষে এ দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, মানুষের ঈমান-আকিদার হেফাজত করা, মানুষকে পরকালমুখী করা, প্রচলিত শিরক-বিদআত ও কুসংস্কারসমূহ রদ করা এবং শরিয়তবিরোধী সব কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ভূমিকা পালনের শিক্ষার পাশাপাশি দেশপ্রেম এবং জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা ও ভালোবাসার শিক্ষা দেয়া হয় মাদ্রাসাসমূহে; শিক্ষা দেয়া হয় উগ্রবাদ ও ইসলামবিরোধী সব চরমপন্থার বিরুদ্ধে।

তিনি আরও বলেন, ওলামায়ে কেরামদের প্রচেষ্টার কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়সহ সবাই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বসবাস করছে। ইসলাম সব সময় মানবাধিকার, শান্তি, নিরাপত্তা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার কথা বলে, অমুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তাদানের কথা বলে।
তিনি বলেন, এ দেশে মানবপ্রাচীর তৈরি করে মন্দির পাহারা দেয়ার নজির আমরা দেখিয়েছি। অথচ ভারতে এর উল্টো চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি।
আল্লামা আহমদ শফী বলেন, দিল্লীতে মুসলমানদের ওপর চালানো ভয়াবহ নির্যাতন পরিষ্কার রাষ্ট্রীয় নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।

মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যার পাশাপাশি পবিত্র স্থান মসজিদে আগুন দেয়া হয়েছে, খুঁজে খুঁজে মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
ভারতের শত শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ঐতিহ্যের অবদানে মুসলমানদের নাম মিশে আছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ভারতের ঐতিহাসিক বহু স্থাপত্য মুসলমানদের তৈরি। চাইলেই এ সব মুছে দেয়া যায় না।
মহাসম্মেলনের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম-১৫ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাংসদ প্রফেসর আল্লামা ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। তিনি বলেন, ইসলাম শান্তি, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের ধর্ম। জোর-জবরদস্তী, নৃশংসতা ও নিরপরাধ মানুষ হত্যা শান্তির ধর্ম ইসলাম কখনও স্বীকৃতি দেয় না। মহাসম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আল জামেয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আবদুল হালিম বোখারী। প্রধান ওয়ায়েজ ছিলেন আল্লামা হাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী কুয়াকাটা।
মহাসম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ আলেম আল্লামা হাবিবুল্লাহ, আল্লামা মুফতি গোলাম কাদের, আল্লামা সরওয়ার কামাল আজিজি, মাওলানা আব্দুল মোবিন, মাওলানা আমির আহমদ।

তাকরির পেশ করেন জামেয়া জিরি পটিয়ার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ মুহাম্মদ তৈয়ব, আল্লামা ড. আ ফ ম খালেদ হোসাইন, আল্লামা মুফতি ফয়েজুল্লাহ, মাওলানা ওবাইদুল্লাহ হামযা, আল্লামা আবদুর রহিম আল মাদানী, আল্লামা আলতাফ হোসেন, আল্লামা আশরাফ আলী গাজী, মাওলানা মহিউদ্দিন হেলালী, মুফতি হাবিবুল ওয়াহেদ, মাওলানা হেলাল উদ্দিন, মাওলানা আবদুল্লাহ আল মারুফ প্রমুখ।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031