একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর স্বামী অনিক মাহমুদকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছেন । কাওসার আহমেদ নামে একজন আইনজীবীর মাধ্যমে চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি অনিককে নিজের সই করা নোটিশ পাঠান তিনি। পরবর্তীতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী কাওসার আহমেদ সেই তালাকের নোটিশ অনিকের উত্তরা ও গাজীপুরের বাসার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন।

নোটিশে শাবনূর লিখেছেন, ‘আমার স্বামী অনিক মাহমুদ সন্তান এবং আমার যথাযথ যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করেন না। সে মাদকাসক্ত। অনেকবার মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় এসে আমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে। আমাদের ছেলের জন্মের পর থেকে সে আমার কাছ থেকে দূরে সরে থাকছে এবং অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে আলাদা বসবাস করছে।’

‘একজন মুসলিম স্ত্রীর সঙ্গে তার স্বামী যে ব্যবহার করেন অনিক সেটা করছেন না, উল্টো নানাভাবে আমাকে নির্যাতন করে। এসব কারণে আমার জীবনে অশান্তি নেমে এসেছে। চেষ্টা করেও এসব থেকে তাকে ফেরাতে পারিনি। বরং আমার সন্তান এবং আমার ওপর নির্যাতন আরও বাড়তে থাকে। উপরোক্ত কারণগুলোর জন্য মনে হয়, তার সঙ্গে আমার আর বসবাস করা সম্ভব নয় এবং আমি কখনো সুখী হতে পারব না।’

‘তাই নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং সুন্দর জীবনের জন্য তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছেদ করতে চাই। মুসলিম আইন এবং শরিয়ত মোতাবেক আমি তাকে তালাক দিতে চাই। আজ থেকে সে আমার বৈধ স্বামী নয়, আমিও তার বৈধ স্ত্রী নই।’

এ ব্যাপারে শাবনূর বা অনিক কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তারা কেউই ফোন ধরেননি। তালাকের নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন শাবনূরের আইনজীবী কাওসার আহমেদ। তিনিই অনিকের বাসার ঠিকানায় তালাকের নোটিশ এবং নিজের প্রস্তুত করা হলফনামা পাঠান।

অ্যাডভোকেট কাওসার আহমেদ জানান, ‘গত ২৬ জানুয়ারি অনিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করেছেন শাবনূর। গত ৪ ফেব্রুয়ারি অনিকের উত্তরা এবং গাজীপুরের বাসার ঠিকানায় সেই নোটিশ পাঠানো হয়। উত্তরার নোটিশটি ফেরত আসলেও গাজীপুরের ঠিকানায় পাঠানো নোটিশ এখনও ফেরত আসেনি। সেটি অনিক গ্রহণ না করলে এরই মধ্যে ফেরত আসত। আইনগতভাবে শাবনূর ও অনিকের তালাক কার্যকর হবে ৯০ দিন পর।

শাবনূরের পাঠানো তালাকের নোটিশের অনুলিপি অনিকের এলাকার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান এবং কাজী অফিস বরাবরও পাঠানো হয়েছে। এই তালাক নোটিশে সাক্ষী রয়েছেন মো. নুরুল ইসলাম ও শামীম আহম্মদ নামে দুজন।

২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর পেশায় ব্যবসায়ী অনিক মাহমুদের সঙ্গে আংটি বদল হয় শাবনূরের। এরপর ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর শাবনূর-অনিকের সংসার আলো করে আসেন আইজান নিহান নামে এক পুত্রসন্তান।

বছর তিনেক আগেও মিডিয়ায় শাবনূর ও অনিকের ছাড়াছাড়ির গুঞ্জন ওঠে। সে সময় অনিক মিডিয়াকে বলেছিলেন, এমন কিছু হয়নি। তারা একসঙ্গেই আছেন, ভালো আছেন। কিন্তু অনিকের নতুন পাসপোর্টে এখন স্ত্রীর নামের জায়গায় আয়েশা আক্তারের নাম দেয়া আছে।

এদিকে প্রয়াত নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর পেছনে শাবনূরের ‘অতি-অন্তরঙ্গতা’কে দায়ী করে সম্প্রতি আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে পিবিআই। সেখানে বলা হয়, সালমান শাহ্ খুন হননি, আত্মহত্যা করেছেন। তার আত্মহত্যার পাঁচি কারণে মধ্যে শাবনূরের সঙ্গে ‘অতি-অন্তরঙ্গতা’ অন্যতম। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে শাবনূর বলেন, ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031