সবই সম্ভব বাংলাদেশে! এই কথাটি প্রবাদের মতো অহরহ ব্যবহার হতে শোনা যায়। কথাটির বাস্তব প্রমাণ দেখা মিলল রাজধানীর পান্থপথের ফুটপাতের একটি ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকানে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে দোকাটিতে বিক্রি করা হচ্ছে মাস্ক।

বিভিন্ন ধরনের টুকিটাকি খাবারে দোকানটি ভরপুর হলেও দোকানে সাঁটানো মাস্ক বিক্রির বিজ্ঞাপন মনোযোগ আকর্ষণ করছে এই পথে চলাচল করা সাধারণ পথচারীর।

চায়ের দোকানে মাস্ক বিক্রির কাণ্ডটি দেখে অবাক হচ্ছেন পথচারীদের অনেকেই। আবার কেউ কেউ বিষয়টি দেখে অবাক হয়ে একাকি হাসছেন।

তবে কেউ অবাক কিংবা অনেকে বিষয়টি হাসির ছলে দেখলেও মাস্ক বিক্রিতে ভালোই সাড়া পাচ্ছেন এই চায়ের দোকানি। প্রতি পিচ মাস্ক ৩০ টাকা করে হাঁকছেন।

চা দোকানি রুবেল জানান, সপ্তাহখানেক থেকে তিনি মাস্ক বিক্রি শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে মাস্ক বিক্রি করে কিছু বাড়তি টাকা আয় হয়েছে তার। রুবেল বলেন, ‘আমার দোকানে যারা চা-নাস্তা খাইতে আসে তাদের অনেকে মাস্ক কিনে নিচ্ছেন। দোকানে ৩০ টাকা লিইখ্যা রাখলেও পরিচিতদের কাছে ২৫ টাকা হলে বিক্রি করে দিচ্ছি। গত কয়দিন চা বিক্রির সঙ্গে বাড়তি কয়টা টাকা ইনকাম করছি।’

গত বছরের শেষের দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম নভেল করোনাভাইরাস শুরু হয়। চীনে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকেই করোনা ঠেকাতে বাংলাদেশে মাস্ক ব্যবহার শুরু হয়। ক্রমেই দেশে মাস্ক ব্যবহারের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে মাস্কের সংকটও দেখা দেয়। দেশের ফার্মেসিগুলোতে বাড়তি টাকা দিয়েও মেলে না মাস্ক।

এই সংকটের মধ্যে নতুন করে দেশে মাস্ক তৈরির ধুম লেগে যায়। আর তখন থেকে ফার্মেসি ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণভাবে মাস্ক বিক্রি হতে দেখা যায়।

রুবেল বলেন, ‘করোনা রোগের জন্য মানুষের মাস্কের দরকার হয়। অনেকে ওষুধের দোকানে মাস্ক খুঁইজ্যা পায় না। তখন চিন্তা করলাম, এটা মানুষের বেশি দরকার। বিক্রি করলে কয়টা টাকা ইনকামও হবে মানুষের উপকারও হবে।’

রুবেলের সঙ্গে আলাপের সময় সেখানে চা খাচ্ছিলেন কয়েকজন। তাদেরই একজন চায়ে খেয়ে যাবার সময় একটি মাস্ক কেনেন। ওই ব্যক্তি বলেন, ‘করোনার কারণে মাস্ক ব্যবহার করতে হচ্ছে। চায়ের দোকানে মাস্ক দেখে একটু অবাক হলেও এখান থেকে একটা মাস্ক কিনলাম। তা না হলে অনেক দূরে ফার্মেসিতে যেতে হবে।’

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম তিনজনের করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংবাদ আসে। আজ সোমবার পর্যন্ত দেশে মোট ৩৩ জন করেনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর)। আর মারা গেছেন তিনজন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031