করোনা পরিস্থিতি বিশেষত বাংলাদেশে ঢাকায় থাকা বিদেশি কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। যদিও সরকারের তরফে কূটনীতিকদের অভয় দেয়া হয়েছে। দফায় দফায় ব্রিফিং হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্পেশাল ফ্লাইটে ঢাকায় থাকা আমেরিকানদের ফেরানোর চিন্তা করছে মার্কিন দূতাবাস। মঙ্গলবার এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার এমনটাই জানিয়েছেন।
মার্কিন দূত আমেরিকান চার্টার্ড ফ্লাইট ঢাকায় নামানো এবং তাতে নাগরিকদের ফেরার কারিগরি সহায়তা নিশ্চিতেও সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে কবে নাগাদ ওই ফ্লাইট আসবে এবং তাতে কতজন আমেরিকান ফিরবেন তা তিনি খোলাসা করেননি। এদিকে সেগুনবাগিচার বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিঙ্ক জানিয়েছেন, ইউরোপের ৯ জন নাগরিক তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরতে থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে বুকিং দিয়েছিলেন।
কিন্তু আজ থাই এয়ার জানিয়ে দিয়েছে করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের ভয়াবহতার আশঙ্কায় তারা তাদের সমুদয় ফ্লাইট বন্ধ করতে যাচ্ছে। তাদের বুকিংও বাতিল হয়ে গেছে। ফলে ওই ইউরোপীয়ানদের গন্তব্যে ফেরাতে দূতাবাসগুলোকে বিকল্প খুঁজতে হচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে বাংলাদেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে বিদেশি কূটনীতিক, পরিবার ও তাদের নাগরিকদের সুরক্ষা বিষয়ে আলোচনায় ঢাকাস্থ প্রভাবশালী ৬ জন রাষ্ট্রদূত একসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক করতে যান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ২৭ রাষ্ট্রের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্টদূতদ্বয় ছাড়াও বৈঠকে অংশ নেন বৃটেন, জাপান, ইতালি ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূত। করোনা সেলের প্রধান অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ডা. খলিলুর রহমান সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। মন্ত্রী-সচিবের দপ্তর সংলগ্ন সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ, পশ্চিম ইউরোপ ও ইইউ, কনস্যুলার ও কল্যাণ, অফ্রিকাসহ সংশ্লিষ্ট ৫ মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে- কূটনীতিকদের বলা হয়েছে- বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টিকারী মহামারী করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ রোধে গোটা দেশকে কার্যত লকডাউন করা হয়েছে। নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। বিদেশি কূটনীতিকদের বিষয়ে সরকারের বিশেষ নজর অর্থাত অগ্রাধিকার রয়েছে। কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কেউ করোনা আক্রান্ত হলে রাজধানীর ৩টি নির্দিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আইসিইউ ফ্যাসিলিটিজ সমৃদ্ধ একটি ফ্লোরই প্রস্তুত করা হচ্ছে। তাছাড়া বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে ৮টি বেড প্রস্তুত থাকবে। উত্তরার একটি হাসপাতালেও কূটনীতিকদের চিকিৎসার কথাবার্তা হচ্ছে।
