পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রভাবে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্পে গত ১৬ দিনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছে । সংগঠনটি বলছে, বাজারে পোল্ট্রি পণ্যের দরপতন এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে না পারার কারণে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ খামারি থেকে শুরু করে শিল্প উদ্যোক্তারা। প্রতিদিনই এ পরিমাণ বাড়ছে। তাছাড়া চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত দেশের একমাত্র পিআরটিসি ল্যাবটি বন্ধ থাকায় বন্দর থেকে ছাড় করানো যাচ্ছেনা পোল্ট্রি শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল। এ অবস্থা চলতে থাকলে থমকে যেতে পারে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প।

বিপিআইসিসি তথ্য মতে, এ পর্যন্ত ব্রিডার্স ইন্ডাস্ট্রি খাতে ৪৫৮ কোটি টাকা, ফিড ইন্ডাস্ট্রিতে ৭৫ কোটি টাকা, বাণিজ্যিক পোল্ট্রি (ডিম ও মাংস) খাতে ৫০৩ কোটি টাকা, প্রসেসড ইন্ডাস্ট্রি খাতে ৩১ কোটি টাকা ও ওষুধ মিনারেল প্রিমিক্সসহ অন্যান্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ হচ্ছে ৮৩ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, করোনা সতর্কতায় জনসমাগম ঠেকাতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে পাইকারি বাজার থেকে শুরু করে খুচরা বাজার-হাটে ক্রেতা সাধারনের উপস্থিতি ব্যাপকমাত্রায় কমেছে। চাল-ডালের মত পণ্যের দর ক্ষেত্র বিশেষে বাড়লেও ব্যাপকহারে কমেছে ব্রয়লার মুরগি, একদিন বয়সী বাচ্চা ও ডিমের দাম। পোল্ট্রি ও ফিস ফিডের উৎপাদন প্রায় ৭০-৭৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চার দাম মাত্র ১ টাকায় নেমে এসেছে, যেখানে উৎপাদন খরচ প্রায় ৩৫ টাকা।

এছাড়া পোল্ট্রি প্রসেসড প্রোডাক্টস এর বিক্রি ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। কাজেই দেখা যাচ্ছে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্পে ইতোমধ্যেই ভয়াবহ ধ্বস নেমেছে। মসিউর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক হিসাব মতে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদি আরও এক সপ্তাহ এ অবস্থা চলতে থাকে তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৬৫০ কোটি টাকা ছাড়াবে। এরপরও যদি অবস্থার উন্নতি না হয় তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে দৈনিক প্রায় ১০০ কোটি টাকা। তাছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও মার্কেট স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে আরও অন্তত এক মাস।

পোল্ট্রি শিল্পকে ঘুরে দাঁড়াতে বিপিআইসিসির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ৬ দফা দাবি জানানো হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংকের সুদ আগামী ৬ মাসের জন্য এবং পোর্ট ডেমারেজ পুরোপুরি মওকুফ, সরকার কর্তৃক ঘোষিত খাদ্য সহায়তার অংশহিসেবে ডিম ও মুরগির মাংস বিতরণ, ৩০ শতাংশ আর্থিক প্রণোদনা প্রদান ও করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক সচেতনতার অংশহিসেবে সরকারি এবং বেসরকারি গণমাধ্যমে ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের ইতিবাচক প্রচারণা চালানো। যাতে এ ধরনের পুষ্টিকর ও প্রোটিন জাতীয় খাদ্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধেও কার্যকর। এ প্রসঙ্গে বিপিআইসিসির সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, করোনা সতর্কতায় লকডাউনের কারণে পাইকারি থেকে খুচরা বাজার-হাটে ক্রেতা কমেছে। চাল-ডালসহ অন্য সব পণ্যের দাম বাড়লেও ব্যাপক হারে কমেছে ব্রয়লার মুরগি, একদিন বয়সী বাচ্চা ও ডিমের দাম। পোল্ট্রি ও ফিশ ফিডের উৎপাদন প্রায় ৭০-৭৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চা দাম মাত্র ১ টাকায় নেমে এসেছে, যেখানে উৎপাদন খরচ প্রায় ৩৫ টাকা। এ ছাড়া এ শিল্পে প্রক্রিয়াজাত পণ্যের বিক্রি ৯৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সব মিলে ভয়াবহ ধ্স নেমেছে।

এ প্রসঙ্গে ব্রিডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি) সভাপতি রকিবুর রহমান টুটুল বলেন, পোল্ট্রি শিল্পখাত ৪ এপ্রিলের পর আর এক সপ্তাহ লকডাউন বাড়লে মোট আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ ১৬৫৩ কোটি টাকা দাঁড়াবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031