বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার এয়ারলাইন্স কর্মী তাদের কাজ হারিয়েছেন করোনাভাইরাসের কারণে । এয়ারলাইন্সগুলোর শত শত উড়োজাহাজ এখন পড়ে আছে বিমানবন্দরগুলোর হ্যাঙ্গারে। এমনকি বন্ধ হয়ে গেছে অনেক বিমানবন্দর। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের এরকম একজন পাইলট এখন কাজ করছেন ব্রিটেনের এক বড় সুপারস্টোর চেন টেসকোর ডেলিভারি ড্রাইভার হিসেবে।

ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের সাবেক পাইলট পিটার লগিন সোমবার এ নিয়ে টুইটারে এক পোস্টে লেখেন, ‘সেভেন-ফোর-সেভেনের চাবি আপাতত ঝুলিয়ে রেখেছি। এখন ফিরে এসেছি টেসকোর ভ্যানের ককপিটে।’

পিটার লগিনের টুইটার প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, তিনি মূলত একজন পাইলট। কাজ করেছেন ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে। এর আগে ছিলেন থমাস কুক নামের এক বড় পর্যটন কোম্পানিতে যেটি কিছুদিন আগে দেউলিয়া হয়ে গেছে।

পিটার যে লকডাউনের মধ্যে টেসকোর ডেলিভারি ড্রাইভারের কাজ বেছে নিয়েছেন, সেজন্যে বহু মানুষ তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তার টুইটের নীচে একজন লিখেছেন, ‘তুমি যে কি দারুণ এক সুপারস্টার। এই সংকট উত্তরণে আমাদের এমন জেদ আর দৃষ্টিভঙ্গীই তো দরকার। তুমি একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সবার জন্য বার্তাটা পরিস্কার- এরকম সময়ে হয় এভাবে অত্যাবশকীয় কাজে সাহায্য করো, নয়তো বাড়ি বসে থাকো।’

মজার মজার অনেক মন্তব্যও করেছেন অনেকে। একজন লিখেছেন, “সত্যি কি তোমার কাছে #747 আছে? এবং যখন উড়োজাহাজটি পার্ক করে রাখা হয় তখন কি তোমরা সেটি চাবি দিয়ে লক করে রাখো?” জবাবে পিটার লিখেছেন, ‍“দুর্ভাগ্যজনকভাবে বড় জেট বিমানের কোন চাবি থাকে না, যদি থাকতো বেশ ভালোই হতো।”

ইয়ান নামের একজন জানতে চেয়েছেন, “যখন তোমরা পাইলটরা দীর্ঘ সময় বিমান চালাও না, তখন কি তোমাদের চিন্তা হয় যে বিমান চালানো ভুলে যাবে? নতুন করে তোমরা যখন আবার বিমান চালানো শুরু করবে তখন কি তোমরা আবার সাইমুলেটরে নতুন করে ট্রেনিং নেবে?

জবাবে পিটার লিখেছেন, বিমান চালানোর দক্ষতা ভুলে যাওয়ার আশংকা আসলেই আছে। তবে একেকজনের বেলায় এটা এক এক রকম। পাইলট হিসেবে আমাদের যে নিয়ম মানতে হয়, তা হলো সর্বশেষ ৩৫ দিনে অন্তত একটি এবং ৯০ দিনে তিনটি ল্যান্ডিং এর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যদি সত্যিকার বিমানে এই অভিজ্ঞতা না থেকে থাকে, তখন সাইমুলেটরে এরকম অভিজ্ঞতা নিতে হবে।

যেভাবে থমকে গেছে বিমান চলাচল

করোনাভাইরাসে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ একটি সেক্টর হচ্ছে বিমান পরিবহন। প্রত্যেকটি দেশের সব ছোট-বড় এয়ারলাইন্স এখন বিরাট সংকটে। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ মাত্র গত সপ্তাহেই প্রায় ৩০ হাজার কেবিন ক্রু এবং গ্রাউন্ড স্টাফকে সাময়িকভাবে ছুটিতে পাঠিয়েছে।

করোনাভাইরাসের তাদের প্রায় পুরো বিমান বহরই এখন গ্রাউন্ডেড করে রেখেছে। বিশ্বের আরও অনেক বড় বড় এয়ারলাইন্সের অবস্থাও তাই। দেশে দেশে জারি করা লকডাউন এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি উঠে যাওয়ার পরও এয়ারলাইন্সগুলোর আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনেক সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র: বিবিসি

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031