বিশ্বের অন্যতম ধন্যাঢ্য দেশ বৃটেনের অল্প আয়ের মানুষজন করোনাভাইরাসের কারণে আরোপ করা লকডাউনে রেহাই পাচ্ছেন না । লকডাউনে থাকায় কোনো আয় নেই তাদের। ফলে খাবার ছাড়াই দিনতিপাত করতে হচ্ছে অসংখ্য মানুষকে। বিখ্যাত দাতব্য সংস্থা ফুড ফাউন্ডেশন বলেছে, লকডাউনের মাত্র ৩ সপ্তাহ যেতে না যেতেই ১৫ লাখ বৃটিশ সারাদিন না খেয়ে কাটিয়েছেন। তাদের হয় কোনো টাকা ছিল না, কিংবা খাবার কেনার কোনো উপায় ছিল না। প্রায় ৩০ লাখ মানুষ দিনে অন্তত এক বেলা খাবার না খেয়ে থাকছেন। ১০ লাখেরও বেশি মানুষ জানিয়েছেন, এই মহামারির কারণে তাদের এই মুহূর্তে কোনো আয় নেই। এদের এক-তৃতীয়াংশই মনে করেন, তারা হয়তো সরকারের কোনো সহায়তা পাবেন না।

এ খবর দিয়েছে গার্ডিয়ান।
খবরে বলা হয়, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসে এই সপ্তাহে বড় আকারে জরিপ পরিচালনা করে ইউগভ। সেই জরিপের ভিত্তিতেই এই ফলাফল প্রকাশ করে ফুড ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আনা টেইলর বলেন, এই ক্রাইসিস এককভাবে ফুডব্যাংক বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সামলাতে পারবে না। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারকে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করতে হবে। সেই অর্থ যেন খাবার কিনতে অসমর্থ পরিবারগুলোর পকেটে যায় সরাসরি, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
বিনামূল্যে খাদ্যালয় বা ফুডব্যাংক পরিচালনাকারী দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে যে, জরুরী খাদ্যের জন্য ফুডব্যাংকে আসা মানুষের সংখ্যা অত্যাধিক বেড়ে গেছে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফুড এইড নেটওয়ার্ক-এর সমন্বয়ক সাবাইন গুডউইন বলেন, সরকারের প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত শ্লথ। পরিস্থতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের নেটওয়ার্কের আওতাধীন ফুডব্যাংকগুলোতে সাহায্যপ্রার্থীদের সংখ্যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ৩০০% বৃদ্ধি পেয়েছে।”
লিভারপুল শহরের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্থানীয় পরিষদ থেকে মানুষকে জরুরী অনুদান দেওয়ার হার ১৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। যাদের খাবার কেনা বা বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার টাকা নেই তাদেরকে এই জরুরী সেবা দেওয়া হচ্ছে।
লিভারপুলে এমনিতেই ফুডব্যাংকের নেটওয়ার্ক খুবই ভালো। তারপরও গত কয়েক সপ্তাহে ফুড বিতরণের দাতব্যসংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে।
ফেয়ারশেয়ার নামে দেশজুড়ে উদ্বৃত্ত খাদ্য সরবরাহ করে একটি প্রতিষ্ঠান। লিভারপুলে তাদের অফিস দীর্ঘক্ষণ খোলা রাখা হচ্ছে। সকাল ৭টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে ফুডব্যাংক। গত ৫ দিনে বিভিন্ন পরিবারকে ৩ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ডের খাবার সরবরাহ করেছে তারা। এসব ফুডব্যাংককে সহায়তা করেন ফুটবল ভক্তরা। তারা দাতব্য সংস্থার জন্য দেড় লাখ ডলার অনুদান সংগ্রহ করে দিয়েছেন। কিন্তু শহরের সহকারি মেয়র জেইন করবাট বলেন, সরকারের ব্যয় সংকোচন আর কভিড-১৯ উভয়ের শিকার হচ্ছেন মানুষজন। দাতব্য সংস্থা একলা এই সংকট সামলাতে পারবে না। সরকারকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031