দেশের বেশির ভাগ পোশাক কারখানা বন্ধ করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চলমান সাধারণ ছুটির মধ্যে। চলতি মাসের ১৬ তারিখের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন পরিশোধে সরকারের নির্দেশনা থাকলেও এখনো অনেক পোশাক শ্রমিক বেতন পাননি। ফলে তারা বুধবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন। যদিও পোশাক শ্রমিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে তাদের সদস্যভুক্ত ৭৮ ভাগ কারখায় শ্রমিকদের বেতন দেয়া হয়েছে। বাকি কারখানা ২০ থেকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে বেতন দেয়া হবে।

বুধবার এক অডিও বার্তায় বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, বিজিএমইএর সদস্য সদস্যসংখ্যা চার হাজার ৬২১। আগামীকাল আমাদের সদস্যভুক্ত ৮০ শতাংশ কারখানায় শ্রমিকের বেতন দেয়া হবে।

১৩ এপ্রিল এক বিবৃতিতে চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শ্রমিকদের মার্চের বেতন ১৬ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এ নির্দেশ না মানলে বা উক্ত তারিখের মধ্যে বেতন প্রদানে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আগামীকাল সেই ১৬ এপ্রিল। নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে সব কারখানায় বেতন দেয়া সম্ভব হবে না স্বীকার করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘শতকরা ৮০ শতাংশ কারখানার বেতন আগামীকালের মধ্যে দেয়া সম্ভব হবে। কিছু কারখানা ১৬ তারিখের মধ্যে বেতন দিতে পারবে না। তাদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। বিভিন্ন কারণে তারা বেতন দিতে পারছে না।

‘গাড়ি চলছে না, বিভিন্ন জায়গায় ব্যাংকগুলো অর্ধেক খুলছে, সেগুলোও সীমিত সময় খোলা থাকছে। আশা করি আমরা ২০ থেকে ২২ তারিখের মধ্যে কারখানাগুলোর বেতন পরিশোধ করা যাবে। যদি এক দুইদিন বেশি লাগে খুব অল্প ফ্যাক্টরির লাগবে। আমরা চেষ্টা করবো শতকরা ৮০ শতাংশ ফ্যাক্টরির বেতন আগামীকালকের মধ্যে শেষ করতে। বাকি যে কজন থাকবেন আমরা আশা করি যথা শিগগির শেষ করতে পারবো।’

বেশ কিছু জায়গায় বেতনের জন্য আজ শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। এ বিষয়ে রুবানা হক বলেন, ‘শ্রমিকরা যখন বেতনের জন্য মাঠে নামে, তখন তারা কার সদস্য তা দেখার উপায় নেই। তাই আমাদের দায়বদ্ধতা থেকে সব ব্যাংকের কাছে বেতন দেয়ার সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য আবেদন করেছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বলে দিচ্ছে।’

যেসব এলাকার শ্রমিক অসন্তোষ হচ্ছে সেসব এরকায় যোগাযোগ করে শ্রমক অসন্তস সমাধানের চেষ্টা করছি আমরা। শ্রমিকরা মার্চের বেতন পাবেন এটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি। আর অসন্তসগুলো ছোট ফ্যাক্টরিতে হচ্ছে। তাতেই বোঝা যাচ্ছে কারা বেশি কষ্টে আছেন। কাজেই সব ফ্যাক্টরির শ্রমিকতো শ্রমিক সবাইকে আমাদের দেখতে হবে। আমরা এ বিষয় লক্ষ রাখছি। সমাধানের চেষ্টা করছি। আমাদে লক্ষ্য হলো শ্রমিকের বেতন দেয়া শ্রমিকের বেতন দিতে পারলে আমরা সবাই খুশি থাকি।

বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ‘২৪ লাখ ৭২ হাজার শ্রমিকের মধ্যে আজ পর্যন্ত ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ জন তথা ৭৮ শতাংশ শ্রমিক মার্চের বেতন পেয়েছেন। আগামীকালের মধ্যে ৮০ শতাংশ পোশাক শ্রমিক বেতন পাবেন। বাকি ২০ শতাংশ শ্রমিকের মার্চে বকেয়া বেতন ২০ থেকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।’

বিজেএমইএর সভাপতি বলেন, ‘গণপরিবহন বন্ধ। অনেক শ্রমিককে এখনো ক্যাশে বেতন দিতে হয়, যা আগামী মাস থেকে আর ক্যাশ দিতে হবে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। সব ব্যাংকের শাখা খোলা না। এ কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে। এটি সমাধানে পাঁচ থেকে সাত দিন সময় লাগবে।’

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031