আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারতে মহামারী নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিখরে পৌঁছতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

দ্বিতীয় দফার লকডাউনে সংক্রমণ খানিকটা রোধ করা গেলেও দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বৃদ্ধির সঙ্গে মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এমন তথ্যে সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।

আনন্দবাজার শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই সূত্র মতে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারতে করোনা সংক্রমণের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছতে পারে। তবে লকডাউনের জেরে যে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা গিয়েছে তাও মনে করছেন স্বরাষ্ট্র কর্তাব্যক্তিরা।

ভারতে জানুয়ারি মাসে প্রথম করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। মার্চে এসে সেই সংক্রমণ অনেকটাই বেড়ে যায়। তারপর ২৫ মার্চ প্রথম দফায় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন জারি করা হয়েছে। দুদিন আগেই করোনার হটস্পটগুলি চিহ্নিত করে এলাকাগুলি সিল করে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। এই পুরো বিষয় নিয়ে কেন্দ্র একটি অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন শুরু করেছে।

সেই মূল্যায়নের সঙ্গে জড়িত কেন্দ্রের এক পদস্থ আধিকারিক একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘পরের এক সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। দেশে করোনার পরীক্ষা ব্যাপক হারে বাড়ানো হচ্ছে। যাদের জ্বর, সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা রয়েছে, তাঁদের টেস্ট করা হবে।’

এছাড়া সারাদেশে বাড়িতে বা হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রায় সবার পরীক্ষা করা হবে। প্রায় প্রত্যেকের কোভিড-১৯ টেস্ট হবে হটস্পটগুলিতে। স্বাভাবিকভাবেই টেস্টের সংখ্যা বাড়লে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। সেই কারণেই আগামী সপ্তাহকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন ওই আধিকারিক।

পাশাপাশি যেসব রাজ্য আগেভাগে লকডাউন ঘোষণা করেছে, সেখানে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা গিয়েছে বলে কেন্দ্রের ওই মূল্যায়নে উঠে এসেছে। উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে তিনটি রাজ্যে— রাজস্থান, পঞ্জাব ও বিহার। এই রাজ্যগুলিতে করোনা আক্রান্তরা চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠছেন। নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। ফলে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে পরিস্থিতি।

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এখন ৩৬ হাজারেরও বেশি মানুষ কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে বা বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রায় প্রত্যেকের কোভিড-১৯ টেস্ট করা হবে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ওই আধিকারিক জানিয়েছেন।

কিন্তু কেন্দ্রের উদ্বেগ বেড়েছে আরও একটি কারণে। ওই আধিকারিকের মতে, ‘হটস্পট’ বা ক্লাস্টারগুলির চেয়েও বিচ্ছিন্ন সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তিনি বলেন, ক্লাস্টারগুলি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। কিন্তু বিচ্ছিন্ন সংক্রমণ আটকানো খুব কঠিন। তবে মে মাসে সংক্রমণ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছলেও তার পর থেকে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলেও মনে করেন তিনি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031