
ঢাকা : পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিতর্কিত ইসলামি চিন্তাবিদ জাকির নায়েককে নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই ভারত ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো সরব। বিশেষ করে রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর জাকির নয়েক প্রতিদিনিই আলোচানার খোড়াকে পরিণত হচ্ছেন।তাঁর বক্তব্য জঙ্গিবাদকে উসকে দিচ্ছে-এমন অভিযোগে তাঁর পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এই দুটি দেশে।
তাঁকে নিয়ে প্রতিদিন নানা প্রতিবেদন ছাপা হচ্ছে।ফেসবুকে তাঁর পক্ষে-বিপক্ষে নানা প্রচার প্রচারণা চলছে।গ্রেপ্তারের শঙ্কায় ওমরা হজ শেষে তিনি ভারতেও ফিরেননি।তবে এ নিয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছিল না।অবশেষে তিনি সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে কথা বলেছেন।এতে তিনি মিডিয়ার ওপর ক্ষোভ ঝেঁরেছেন।অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে জাকির নায়েক লিখেছেন, টেলিভিশন বা দৈনিক পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিতে তিনি আগ্রহী কিন্তু শঙ্কিত। ফলে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের জবাব দেবেন ভিডিও বার্তায়।বিবৃতির শুরুতেই জাকির নায়েক লিখেছেন, ‘সংবাদমাধ্যম নায়ককে খলনায়কে, আর খলনায়ককে নায়কে পরিণত করতে পারে।’
বিবৃতিতে জাকির নায়েক বলেন, “১ জুলাই ঢাকায় যে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়, তাকে ভিত্তি করে ‘সংবাদমাধ্যম আমার বিচার চালাচ্ছে’, তাতে আমি আহত হয়েছি। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে আমার যে ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়েছে, তা হয় অপ্রাসঙ্গিক অথবা খণ্ডিত, বা ভুয়া। দৈনিক পত্রিকায় ছাপা আমার বক্তব্যের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।”
তিনি বলেন, ‘আমি টেলিভিশন চ্যানেল বা দৈনিক পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিতে আগ্রহী। কিন্তু আমি শঙ্কিত। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমার বক্তব্যকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এর আগে দেওয়া কয়েকটি সাক্ষাৎকারের পর আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারগুলো ওই টেলিভিশন চ্যানেল ও দৈনিক পত্রিকাগুলো নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে।’
জাকির নায়েক জানান, তিনি কয়েকদিনের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের জবাব দেবেন ভিডিও ফুটেজে। আর তা সংবাদমাধ্যমে পাঠাবেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রকাশ করবেন।
তিনি বলেন, ‘ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এখনও আমার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। তদন্তের স্বার্থে আমি গোয়েন্দাদের সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত।’
সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে জাকির নায়েক নিজের অবস্থানও জানিয়েছেন এই বিবৃতিতে। তিনি বলেন, ‘আমি সন্ত্রাসবাদ বা সহিংসতার সমর্থক নই। আমি বিশ্বব্যাপী সর্বজনীন আলোচনাগুলোতে বহুবার একথা বলেছি যে, আমি কোনও সন্ত্রাসী সংগঠনকে সমর্থন করি না। কেউ আমার কোনও বক্তব্যকে যে কোনও পর্যায়ের সহিংসতার জন্য ব্যবহার করলে, আমি তীব্রভাবে তার নিন্দা জানাই।’
জাকির নায়েক এর আগে টুইট বার্তায়ও লিখেছেন, ‘সংবাদমাধ্যম আমার বিচার চালাচ্ছে। আমাকে সমর্থন করুন, পাশে থাকুন।’
ইসলামের প্রচারের নামে জাকির নায়েক তরুণদের বিপথগামী করছেন, কথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এ যোগ দিতে উৎসাহ জোগাচ্ছেন – এমন অভিযোগ ওঠার পর বাংলাদেশে জাকির নায়েকের চ্যানেল ‘পিস টিভি’-র অন এয়ার সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে। অনলাইনেও পিস টিভির প্রচার বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ভারতেও বন্ধ হয়েছে এর পিস টিভি-র ‘অন এয়ার’। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, দেশে ফিরলে তদন্ত শুরু হবে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে। আইএস সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠায় গ্রেফতার করার ভাবনাচিন্তাও শুরু হয়েছে।
অনলাইনে এখনও চলছে পিস টিভির সম্প্রচার
