র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-৪) অধিনায়ক ও কর্মকর্তারা অভিভাবক ও পরিচয়হীন অসুস্থ সেই ৭২ জন বাবা-মা ও শিশুদের দেখতে গেছেন । ‘করোনায় ভালো নেই পরিবারহীন বাবা-মায়েরা’ শিরোনামে রবিবার একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেটি নজরে আসে এলিট ফোর্সটির ব্যাটেলিয়ন প্রধান অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোজাম্মেল হকের। সোমবার দুপুরে তিনি মিরপুরের পাইকপাড়ার চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার (বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও প্রতিবন্ধী শিশু আশ্রয় কেন্দ্র) যান।

দুটি বাড়িতে মিলটন সমাদ্দার নামে এক যুবক ১৬টি কক্ষে ৬৬ জন প্রবীণ ও ছয় শিশুকে আশ্রয় দিয়েছেন। গত ছয়বছর ধরে তিনি তাদের সন্তানের মতোই আদর-স্নেহ করেন। কিন্তু করোনার কারণে আর্থিকভাবে বিপদে পড়েছেন মিলটন। আগে অনেকের সহায়তা পেলেও বর্তমানে সেটা পুরোপুরি বন্ধ। ফলে বিপাকে বৃদ্ধাশ্রমের অসহায় মানুষগুলো।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে যারা থাকছে তাদের বেশির ভাগ পরিবারে নির্যাতনের শিকার। কাউকে রাস্তায় ফেলে রাখার পরে সেখানে ঠাঁই হয়েছে। আবার কাউকে পরিচয় গোপন করে পরিবারের সদস্যরা রেখে গেছেন। কাউকে আবার মানবিক কারণে বস্তির কুঁড়ে ঘর থেকে এখানে এনে রাখা হয়েছে। বয়সের ভারে সবাই বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে অসহায় এসব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে র‌্যাব কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক। আজ আশ্রমটিতে যান তিনি। দিয়ে আসেন চাল, ডাল ছাড়াও বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী। এ সময় যতদিন সমর্থ্য হবে ততদিন এসব অসহায় মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমি সংবাদটি পড়ার পর কৌতূহল নিয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। বুঝিনি বিষয়টি এতো মানবিক হবে। যারা ওখানে আছেন সবাই অসহায়। বিশেষ করে, যেসব শিশুরা ওখানে আছে তাদেরকে ছোট্ট বেলায় রাস্তায় কিংবা ব্যাগে ভরে ফেলে রাখা হয়েছিল। তারা (মিলটন ও তার স্ত্রী) তাদেরকে যত্ন ও ভালোবাসা দিয়ে বড় করছেন। এসব দেখে আমি আবেগ ধরে রাখতে পারিনি।’

সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। তাদের মানবিক উদ্যোগের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। যতদিন পারব তাদেরকে সহযোগিতা করব।’ তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে কিছু খাবারসামগ্রী দিয়ে এসেছি। রমজান মাস ও ঈদের জন্য আবারও দিয়ে আসবো।’ এর বাইরেও আরেকটি এতিমখানায় খাবার সামগ্রী দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031