ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। অধ্যাপক ড. নেহাল করিম। সমাজ বিজ্ঞানী । তার মতে, ৯৫ ভাগ মানুষ যেখানে সামাজিক দূরত্ব কি সেটা বোঝে না সেখানে লকডাউন কতোটা সফল হবে। নেহাল করিম বলেন, করোনা ভাইরাস কি, এটার প্রভাব কি, এটা কতোটা গভীরে যেতে পারে এগুলো সম্পর্কে সমাজের সাধারণ মানুষের কোনো ধারণা নেই। সরকার সামাজিক দূরত্বের কথা বলছেন। সামাজিক দূরত্ব বললে আমার বাসার কাজের ছেলেটা বুঝবে! কারণ তারাইতো সংখাগরিষ্ট। সামাজিক দূরত্ব না বলে যদি বলা হতো ফাঁকা হয়ে দাঁড়াবেন।
এটা ছোঁয়াচে। সহজ ভাষায় বলতে হবে। যেটা গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, কৃষকরা সবাই বুঁঝতে পারে। আমি বুঝলেই হবে না। আমাকে বুঝতে হবে তারা বুঝতে পারছে কী না। সরাইলে জানাজায় বিপুল মানুষের অংশগ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন, পুরো জনগোষ্ঠির মধ্যে বোধশক্তিসম্পন্ন লোক খুব কম। এখানে আবেগ কাজ করেছে। এই ঘটনায় ডিসিকে প্রত্যাহার করা হলো না কেনো। তাদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া উচিত ছিলো, কিভাবে জনসমাগম হলো। কেন হতে দিলো। এখন সবচেয়ে বড় কথা হলো সরকার এতোকিছু করছে কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো শ্রেয়বোধ জাগেনি। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের শ্রেয়বোধ আছে। ত্রাণ আত্মসাৎ সম্পর্কে তিনি বলেন, চুরিটা আমাদের মজ্জাগত। আমাদের মধ্যে কোনো মূল্যবোধ জাগ্রত নেই। এটা তাদের স্বভাবগত। চোর দুই রকমের আছে। একটি অভাবের চোর। আরেকটি স্বভাবগত। এরা সব স্বভাবগত চোর। এরা যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত তারা কিন্তু মতলবের কারণেই আছে। সেই কারণে চুরি হচ্ছে। তাছাড়া আমাদের দেশে আইন আছে। কিন্তু তার প্রয়োগ নেই। তারা জানে যে তাদের কিছু হবে না। রাজনৈতিক কারণে তারা মুক্তি পেয়ে যাবে। সেই সঙ্গে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি প্রতিষ্ঠানের কিছুটা ছত্রছায়া আছে। যেটা সর্বজনবিদিত। কাজেই তারা চুরি করতে উৎসাহিত হয়। এবং চুরি করে। এদেরকে যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হত। গলায় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে সামাজিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হত এরা চোর। তাহলে তারা লজ্জাবোধের জায়গা থেকে নিজেরা পদত্যাগ করবে। অথবা নিজেকে গুটিয়ে নিবে। এদের সামাজিকভাবে বয়কট না করা হলে তারা থেমে থাকবে না। হোম কোয়ারেন্টিন সম্পর্কে এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে পত্রিকা পড়ি। বাসার খোঁজ-খবর নেই। এরপর বই পড়ি। কম্পিউটারের সামনে বসি। টেলিভিশন দেখি। সময় কাটছে। কিন্তু ওভাবে কাটছে না।
