মানুষ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকলেও জীবিকার তাগিদে কর্মস্থলে ফিরছেন। রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের পোশাক কারখানাগুলোতে যোগ দিতে কয়েকদিন ধরেই ফিরছেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার হাজারো শ্রমিক। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে পাটুরিয়া ঘাট হয়ে তারা ঢাকায় ফিরছেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে শিল্প কলকারখানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অফিস আদালত বন্ধ রয়েছে। ঢাকাসহ এর আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও গার্মেন্টস কারখানা খোলার সিদ্ধান্তে গত কয়েক দিনের মত আজও (বৃহস্পতিবার) পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ঢাকামুখী শ্রমজীবী মানুষের ঢল লক্ষ্য করা গেছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে চারটি ফেরি দিয়ে অত্যাবশকীয় পণ্যবাহী ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্স পার করা হচ্ছে। এরই মধ্যে গাদাগাদি করে ফেরিতে করে নদী পার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

পাটুরিয়া ঘাট পার হয়েই ঢাকাগামী যাত্রীরা সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক, পিকআপ, হাইয়েজ, রিকশাভ্যান ও পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। সরকারি নির্দেশে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে এসব যানবাহন যোগে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে তাদের।

কুষ্টিয়া থেকে আসা গার্মেন্টস শ্রমিক হাফিজ জানান, মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে কর্মজীবীদের নানা ধরনের হয়রানির স্বীকার হতে হচ্ছে। এছাড়া ঢাকায় বাসা ভাড়ার জন্য বাড়িওয়ালা প্রতিদিন চাপ দিচ্ছে। একপ্রকার বাধ্য হয়েই ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে।

ফরিদপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়া পোশাককর্মী আলেয়া বেগম জানান, অফিস থেকে চাপ দেয়ার কারণে আমরা ঢাকা যাচ্ছি। অফিস কর্তৃপক্ষ বলেছে অনুপস্থিত থাকলে চাকরি থাকবে না। তাই বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে। পেটের ক্ষুধার কাছে করোনাভাইরাস কিছুই না। জীবনের ঝুঁকি থাকলেও আমাকে কর্মস্থলে যেতে হবে।

বিআইডব্লিওটিসি’র আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক সালাম হোসেন জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারা দেশে লকডাউন চলছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে মোট ১৭টা ফেরি আছে। এদের মধ্যে চারটি ফেরি দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ও পণ্যবাহী ট্রাকসহ জরুরি যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।

যাত্রী পারাপার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ওই পাড় থেকে যাত্রীরা উঠে আসাতে আমরা তেমন কিছুই করতে পারছি না। মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গাদাগাদি করে নদী পার হচ্ছেন। এতে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি আরও বেড়ে যাচ্ছে।

গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি মনির হোসেন জানান, লকডাউনে যাতে করে মানুষ একস্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে না পারে তার জন্য আমরা মহাসড়কে চেকপোস্ট স্থাপন করে তদারকি করছি। পণ্যবাহী গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সকে ছেড়ে দিচ্ছি। পণ্যবাহী গাড়িতে যেন কোন যাত্রী লুকিয়ে যেতে না পারে তা আমরা বিশেষভাবে নজরে রাখছি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031