২রা মে হাসপাতালটিতে করোনা ইউনিট চালুর পর পরবর্তী ৩৩ দিনে ৩৭৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। সর্বশেষ গতকাল ১৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) করোনা ইউনিটে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এরআগে বুধবার পর্যন্ত মারা যাওয়াদের মধ্যে ৭৯ জন করোনা সংক্রমিত ছিলেন। ২৭১ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন এমন ব্যক্তিদেরও করোনা পরীক্ষা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে অনেকের শরীরে করোনার সংক্রমণ পজিটিভ ধরা পড়েছে। অনেকের নেগেটিভ এসেছে।

আবার অনেকের পরীক্ষার রেজাল্ট এখনও আসেনি।
ঢামেকের করোনা ইউনিটের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ শুরু থেকেই ছিল। ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে সেবা পাওয়া, চিকিৎসক-নার্সদের অপ্রিয় আচরণ, জরুরি প্রয়োজনে তাদের সহযোগিতা না পাওয়া, এমনকি মৃত্যুর ছাড়পত্র পেতে ভোগান্তির অভিযোগ আছে। এছাড়া অক্সিজেন, ভেন্টিলেশন ও আইসিইউ সুবিধা মিলেনি বলেও অভিযোগ করেছেন অনেক রোগীর স্বজনরা। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ভোগান্তির অভিযোগ সুর্নিদিষ্ট নয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা মারা যাচ্ছেন তাদের সবাই করোনা সংক্রমিত না। উপসর্গ ও আনুষাঙ্গিক সমস্যা নিয়ে অনেকে মৃত্যুবরণ করছেন। উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তিরাও করোনা সংক্রমিত ছিলেন কিনা সেটিও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ঢামেক সবধরণের রোগীদের শেষ ভরসাস্থল হওয়াতে এখানে রোগীদের চাপ বেশি। মারাত্বক রোগীদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়।  
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদ মানবজমিনকে বলেন, ঢামেকের বার্ন ইউনিটে সর্বপ্রথম করোনা রোগীর জন্য ইউনিট চালু করা হয়েছিলো। সেখানে পজিটিভ ও উপসর্গ আছে এমন রোগীদের আলাদা আলাদা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। বার্ন ইউনিটে ২৫০টি শয্যার ব্যবস্থা রয়েছে। পরে ১৬মে হাসপাতালের নতুন ভবনে করোনা ইউনিট-২ উদ্বোধন করা হয়। সেখানে ৫০০ রোগীর শয্যা তৈরি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ঢামেকে ৭৫০ জন করোনা রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। শুরুর পর থেকে ৩১শে মে পর্যন্ত ১ হাজার ৬৩৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ২৯৩ জন করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। করোনার উপসর্গ ও করোনা পজিটিভ নিয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন সাড়ে তিনশ রোগী। এরমধ্যে মে মাসের শেষ দিন পর্যন্ত করোনা পজিটিভ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬৬ জন। তিনি বলেন, সাধারণ রোগীদের সর্বশেষ ভরসা ঢাকা মেডিকেল। এখানে করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ এমন রোগীদের ভর্তি নেয়া হয়। এছাড়া আনুষাঙ্গিক রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড রয়েছে। ঢামেকে যেসকল রোগী আসে তাদের বেশিরভাগই একেবারে শেষমূহুর্তে আসে। তাদের অবস্থা এতোটা খারাপ থাকে আইসিইউ সাপোর্ট দিয়েও বাঁচানো যায় না। অনেক রোগী আছে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় রাস্তায় মারা যায়। ডা. আজাদ বলেন, জেনুইন করোনা পজিটিভ রোগীর পাশাপাশি করোনার উপসর্গ নিয়ে অনেকে আসেন। তাদের আমরা সাসপেক্টেড কেস অব কোভিড-১৯ হিসেবে ধরে নেই। হয়তো তার কোভিড-১৯ স্টাবলিশ হয়নি তার আগেই তিনি মারা গেছেন। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষা করা হয়। শুধু যে মৃত্যুবরণ করছেন এমন না অনেক রোগী আছেন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031