করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে কক্সবাজারে । এ কারণে কক্সবাজার পৌরসভাসহ জেলার কয়েকটি এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর সেসব এলাকায় আগামীকাল শনিবার থেকে ১৪ দিনের জন্য কঠোরভাবে লকডাউন ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও করোনা সংক্রান্ত ওয়ার্কিং কমিটির আহ্বায়ক শরাফুল আফসারের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় জানানো হয়, করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যার ভিত্তিতে কক্সবাজার জেলাকে তিনটি জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। জেলার আটটি উপজেলাকে ইউনিয়নভিত্তিক ও চারটি পৌরসভাকে ওয়ার্ডভিত্তিক বিন্যাস করে ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এসব এলাকায় শনিবার থেকে ১৯শে জুন পর্যন্ত লকডাউন বলবৎ থাকবে। প্রয়োজন হলে পরে সিদ্ধান্ত নিয়ে সময় আরো বাড়ানো হবে। এ সময়ে কক্সবাজার পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। তাদের কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও মাহমুদ উল্লাহ মারুফ পরিচয়পত্র ইস্যু করবেন।

লকডাউন চলাকালে শুধু স্বেচ্ছাসেবক ও ইমার্জেন্সি  কাজের লোকজন ছাড়া অন্য কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন না।

কক্সবাজার পৌর এলাকায় যাদের বাড়ির বাইরে পাওয়া যাবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

তবে সপ্তাহে রবি ও বৃহস্পতিবার সীমিত সময়ের জন্য কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর দোকান খুলতে পারবে। সে সময় স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রশাসনের কঠোর মনিটরিং থাকবে। সপ্তাহের অন্যান্য সময় সব মার্কেট, শপিং মল, দোকান, কাঁচাবাজার সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

একইভাবে কক্সবাজার পৌর এলাকায় অবস্থিত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও প্রতি সপ্তাহের রবি ও বৃহস্পতিবার সীমিত সময়ের জন্য খেলা থাকবে। কোনও গাড়ি লিংক রোড থেকে পশ্চিম দিকে শহরে আসতে পারবে না। শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও প্রবেশ করতে পারবে না। লিংক রোড থেকেই সব গাড়ি ছেড়ে যাবে এবং সেখানে এসে থামবে।

কক্সবাজারে কর্মরত এনজিও কর্মকর্তারা এবং তাদের কোনও গাড়ি লিংক রোড থেকে পশ্চিমে শহরে আসতে পারবে না। লিংক রোডে গাড়ি রেখে তাদের অফিস করতে হবে। কক্সবাজার জেলার বাইরের কোনও লোককে এই দুই সপ্তাহ প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।

গণমাধ্যমকর্মী, সংবাদ সংগ্রহকারী, ক্যামেরাম্যান ও সংশ্লিষ্টদের কক্সবাজার প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ থেকে ইস্যু করা পরিচয়পত্র নিয়ে চলাচল করতে হবে। কক্সবাজার প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের ইস্যুকৃত পরিচয়পত্র নিয়ে গণমাধ্যমের লোকজন সংবাদ সংগ্রহ ও ভিজিলেন্স টিমের সঙ্গে থাকতে পারবে।

শহরের মসজিদগুলোতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশিত সংখ্যার বেশি মুসল্লি জামাতে অংশ নিতে ও যেতে পারবে না। কর্তৃপক্ষের এসব নির্দেশনার বিষয়ে কক্সবাজার জেলা তথ্য অফিস, কক্সবাজার পৌরসভা, কক্সবাজার সদর উপজেলার ইউএনও এবং কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগ শুক্রবার পুরো কক্সবাজার শহরে মাইকিং করেছে।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজার জেলায় এ পর্যন্ত ৮৮৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১৮ জন। ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প রয়েছে ঝুঁকিতে। ইতিমধ্যে একজন রোহিঙ্গা মারা গেছেন, ৩৪ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031