পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) দেশের ক্যাসিনো সাম্রাজ্যের অন্যতম নিয়ন্ত্রক বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগে মানিলন্ডারিং মামলা করেছে । তিনটি দেশে প্রায় সাড়ে আট কোটি পাচারের প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতে এই মামলাটি করা হয়। সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক ইব্রাহিম হোসেন রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন।

সোমবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির মিডিয়া শাখার কর্মকর্তা ফারুক হোসেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গতবছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হয়। ওই দিনই গুলশান-২ নম্বরের ৫৯ নম্বর সড়কে খালেদের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া তার নিয়ন্ত্রিত ক্লাবটি থেকে বিপুল পরিমান নগদ টাকা, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও ১৪২ জনকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং আইনে গুলশান ও মতিঝিল থানায় চারটি মামলা করে র্যা ব।

এই ক্যাসিনো গদফাদার রাজধানীর মতিঝিল, শাহজাহানপুর, রামপুরা, সবুজবাগ, খিলগাঁও ও মুগদা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতেন। পরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী জানতে পেরেছে, এসব এলাকায় থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রেল ভবন, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার ফকিরাপুল জোনসহ বেশিরভাগ সংস্থার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন খালেদ। কমলাপুর এলাকায় ‘ভূঁইয়া অ্যান্ড ভূঁইয়া’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে তার।

সিআইডি জানিয়েছে, রবিবার রাতে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মতিঝিল থানায় মামলা করেছে সিআইডি।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আইয়ুব রহমান নামে একজনের সহযোগিতায় খালেদ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে প্রচুর টাকা পাচার করেছে। এরমধ্যে মালয়েশিয়ার ‘মে ব্যাংক’ ও ‘আরএইচবি ব্যাংকে’ ২৬ লাখ রিঙ্গিত (মালয়েশিয়ার টাকা) জমা রেখেছে। মূলত দেশটি খালেদের সেকেন্ড হোম হিসেবে বসবাস করতেন।

এছাড়া সিঙ্গাপুরে অর্পণ ট্রেডার্স প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ইলেক্ট্রনিকস পন্যের প্রতিষ্ঠান খুলেছিলেন। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামে ৫ লাখ পাঁচহাজার সিঙ্গাপুর ডলার পাঠানো হয়। দেশটির একজন নাগরিক আবু ইউসুফ ওরফে আবু হায়দার এই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে নিয়ে যায়।

এর বাইরেরও তৃতীয় দেশ হিসেবে খালেদ ভূঁইয়া থাইল্যান্ডে ১০ লাখ বাথ (থাই টাকা) পাচার করেন। এসব টাকা হুন্ডির মাধ্যমে দেশটিতে পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে তিনটি দেশে মোট সাড়ে আট কোটি টাকা পাচার করেছেন এই ক্যাসিনো সম্রাট।

সিআইডি জানায়, খালেদ ২০১০ সাল থেকে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডে ৭০ বার গিয়েছেন। এছাড়াও ভারত, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে ভ্রমণ করেছে।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031