স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বিশ্ব পরিস্থিতি এবং অভিজ্ঞতা বিচারে বাংলাদেশসহ সারা পৃথীবিতে করোনা ভাইরাসরে সংক্রমণ আরো দুই থেকে তিন বছর স্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন । বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

তবে বিশ্ব পরিস্থিতি দেখে যা অনুমান করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তা হলো কিছুদিন পর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার কমে আসতে পারে।

অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, আমি নিজেও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন। তবে বেশ কিছুদিন আগে তিনি ফিরে আসেন দপ্তরে এবং কাজ শুরু করেন।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপি অর্জিত অভিজ্ঞতা এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, করোনা সংক্রমণের কিছুকাল পরেই বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের উচ্চহার কমে আসতে পারে। কিন্তু করোনার পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি করলে, অনেক লুক্কায়িত এবং মৃত কেসও শনাক্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যার পরিবর্তন দৃষ্টিগোচর না-ও হতে পারে।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতায় এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণের পরামর্শ বা অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতি এক, দুই বা তিন মাসে শেষ হচ্ছে না; এটি দুই থেকে তিন বছর বা তার চেয়েও বেশিদিন স্থায়ী হবে। যদিও সংক্রমণের মাত্রা উচ্চহারে না-ও থাকতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশ একটি জনবহুল এবং অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ দেশ।

অপরপক্ষে, করোনা ভাইরাস একটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে ভাইরাস। এ কারণে অসতর্কভাবে চলাফেরা এবং স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে না চললে এ দেশে সংক্রমণের হার মোকাবিলা করা কঠিন।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখলে কর্মহীনতা, আয়-রোজগারের পথ বন্ধ হওয়া এবং অন্যান্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণেও ব্যাপক অপুষ্টি, রোগ বালাই এবং মৃত্যু ঘটতে পারে। সে কারণে, জীবন ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য সরকারকে কাজ করতে হচ্ছে।

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ও পরিস্থিতি সামাল দিতে কী কী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার এবং এখন পর্যন্ত কী কী করা হয়েছে তার একটা তালিকা তুলে ধরেন আজাদ:

>> দুই হাজার চিকিৎসক ও পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগ হয়েছে।
>> স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ এবং মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট নিয়োগ করা হবে।
>> দীর্ঘস্থায়ী কোভিড-১৯ চিকিৎসা পরিকল্পনা।
>> কোভিড পরীক্ষা হবে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে।
>> জেলা পর্যায়ে আরো বেশি পরীক্ষার সুবিধা বাড়ানো হবে।
>> নতুন এবং সহজ কোভিড-১৯ পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে আসা হবে।
>> জেলা হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা নেয়া হবে।
>> সকল সরকারি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন নেয়া হবে।
>> হাসপাতালে ‘হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা’, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর দ্রুত সরবরাহ করা হবে।
>> পরীক্ষার কিট ও পিপিই সংগ্রহ করা হচ্ছে।

সরকারি ও বেসরকারি খাত যাতে যৌথভাবে এই দায়িত্ব পালন করে সেটার ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। উচ্চ রক্তচাপ ডায়বেটিস ও শ্বাসকষ্ট আছে তাদের মৃত্যু ঝুঁকি বেশি বলে তাদের আলাদাভাবে সাবধান থাকার কথা বলেন তিনি।

Share Now
December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031